পুলিশের বৈঠকে ফেরারি আসামি, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে দিলেন ‘ভাষণ’ও

গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি তিনি। তার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যাসহ একাধিক মামলাও। পুলিশ তাকে খুঁজে না পেলেও খোদ থানার হলরুমে বসে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার ‘ভাষণ’ দিয়ে গেলেন তিনি। পুলিশের ডাকা আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বৈঠকে বেশ খোশমেজাজেই অংশ নিলেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ওই পলাতক আসামি।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের পাশে বসে কিভাবে এক পলাতক আসামি মতবিনিয়ময়ে অংশ নিতে পারেন— এ নিয়ে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে করণীয় নির্ধারণে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় থানার হলরুমে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় এনআই অ্যাক্ট আদালত কর্তৃক পরোয়ানাভুক্ত আসামি চকরিয়ার কোণাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদারও উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশের বৈঠকে ফেরারি আসামি, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে দিলেন ‘ভাষণ’ও 1

চকরিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া সার্কেলের নবাগত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তৌফিকুল আলম।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এনআই অ্যাক্টের সিআর ৮৪৯/১৮ মামলার পলাতক আসামি। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যবিধি ৮৭ ও ৮৮ ধারা মােতাবেক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি দিদারুল হক সিকদার আদালতে আত্মসমর্পন না করে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য পলাতক রয়েছে অথবা আত্মগোপন করেছেন। এ অবস্থায় ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৩৯ (বি) ১ ধারার ক্ষমতাবলে ওই আসামিকে আদেশ জারির ১০ দিনের মধ্যে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন বিচারক রাজীব কুমার দেব। আদেশে বলা হয়, অন্যথায় ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৩৯ (বি) ১ ধারার ক্ষমতাবলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য সমাধা করা হবে।

ফেরারি আসামির সঙ্গে মতবিনিময় সভার বিষয়টি স্বীকার করে চকরিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ‘কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি তালিমের ব্যাপারে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।’

এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!