পুলিশের প্রশ্রয়ে চকরিয়ায় চলছে ৮ শতাধিক থ্রি হুইলার

দেশের ২২টি মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক), মোটরচালিত রিক্সা ও নসিমন করিমন গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এ ঘোষণার চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া অংশে (৩৯ কিলোমিটার সড়ক) দাবড়ে বেড়াচ্ছে ৮ শতাধিক থ্রি-হুইলার। মহাসড়কে এসব গাড়ি চলাচলের কারণে প্রায়ই ঘটছে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। ফলে দিন দিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী, ডুলহাজারা, ফাঁসিয়াখালী, চকরিয়া পৌরসভা, নলবিলা, বানিয়ার ছড়া, বরইতলি ও চিরিংগা মহাসড়কে নিয়মিত চলাচল করছে অন্তত ৮ শতাধিক সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা নসিমন-করিমন। সর্বশেষ ১০ অক্টোবর মহাসড়কের চকরিয়া অংশে নসিমন-কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে দুই ব্যক্তি এবং আহত হয়েছে অনেকে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের গাড়ির চালকেরা জানান, হাইওয়ে পুলিশকে চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে চলাচল করছে থ্রি-হুইলার। এসব গাড়ি নির্বিঘ্নে চলতে শ্রমিকদের কল্যাণের নাম করে প্রভাবশালী একটি চক্র প্রতিদিন চাঁদা আদায় করছেন। এসব চাঁদার একটি ভাগ যাচ্ছে দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের পকেটে। মূলত চিরিংগা ও মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততা ও কার্যকর তদারকির অভাবেই চকরিয়ার মহাসড়কে চলাচল করছে নিষিদ্ধ এসব যানবাহন। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

পুলিশের প্রশ্রয়ে চকরিয়ায় চলছে ৮ শতাধিক থ্রি হুইলার 1

সরেজমিনে চকরিয়া উপজেলার ইসলাম নগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে তিনচাকার যানগুলো। এতে দূরপাল্লার যানবাহনগুলোর চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। বানিয়ারছড়া স্টেশন থেকে চকরিয়া পৌর সদর, বরইতলি থেকে আজিজনগর ও চকরিয়া পৌর সদর বাসস্ট্যান্ড থেকে ডুলহাজারা পর্যন্ত মহাসড়কের প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকায় এসব অটোরিকশার দৌরাত্ম্য বেশি। পৌর শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া এসব অটোরিক্সা মহাসড়ক থেকে যাত্রী উঠা-নামা করায়।

অটোরিক্সা চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘টাকা দিয়ে আমাদের গাড়ি চালাতে হয়। শ্রমিক নেতারা কল্যাণের নামে টাকা তুলে। তা দিয়ে জায়গামতো ম্যানেজ করা হয়। মাসোহারার টাকা দিতে না পারলে গাড়ি ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।’

ট্রাক-মিনিট্রাক মালিক সমিতির নেতারা বলেন, ‘মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধের নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় সড়কে রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না। পুলিশ কঠোর হলেই এ নিষেধাজ্ঞা কাগজে-কলমে বাস্তবায়ন সম্ভব। কিন্তু তারা তা করছে না।’

মাসোহারা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘মহাসড়কে নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। আর থ্রি হুইলার থেকে পুলিশের টাকা আদায়ের অভিযোগটি সঠিক নয়। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার বন্ধে সদা তৎপর রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।’

মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোরশেদুল আলম বলেন, ‘মহাসড়কে চলাচল করা থ্রি হুইলার গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। মহাসড়কে এসব গাড়ি পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!