পুলিশি রোষের শিকার আইনজীবী খালাস, কৃতিত্ব গণমাধ্যমকে

অস্ত্র আইনের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন চট্টগ্রামের শিক্ষানবিশ আইনজীবী সমর কৃষ্ণ চৌধুরী। তাকে প্রবাসী প্রতিবেশীর প্ররোচনায় মাদক ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়েছিল বোয়ালখালী থানা পুলিশ। বুধবার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রামের জেলা জজ মো. ইসমাইল হোসেনের আদালত সমর চৌধুরীকে মামলা থেকে খালাসের আদেশ দেন।

মামলা থেকে খালাস পেয়ে সমর কুষ্ণ চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আজ বুক থেকে বড় একটি পাথর সরে গেল, মুক্ত হলাম। মুক্তির এই কৃতিত্ব পুরোটাই গণমাধ্যমের। গণমাধ্যম আমার পাশে না থাকলে কী হতো তা ভগবানই জানেন। আমাকে বিনাদোষে গত এক বছর চার মাস নানাভাবে কষ্ট দেওয়া হয়েছে। যারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে আদালতের কাছে আমি তাদের বিচার চাইব।’

সমর কৃষ্ণ চৌধুরীর আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘অস্ত্র মামলাটির তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। বুধবার এই মামলার শুনানির জন্য নির্ধারিত ছিল। শুনানি শেষে আদালত সমর কৃষ্ণ চৌধুরীকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৭ মে সমর চৌধুরী চট্টগ্রাম আদালত থেকে বের হওয়ার সময় বোয়ালখালী থানা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরদিন তার হাতে অস্ত্র, টেবিলে ৩৬০ পিস ইয়াবাসহ একটি ছবি গণমাধ্যমে পাঠায় পুলিশ। কিন্তু তখনও শিক্ষানবিশ এই আইনজীবীর শার্টের পকেটে কলম ছিল। যা দেখে সারা দেশে নিন্দার ঝড় ওঠে।

এ ঘটনায় পরদিন ২৮ মে মাদক ও অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর আগে ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর সমর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়। এরপর ২০১৮ সালে ১৫ মার্চ তার বিরুদ্ধে বোয়ালখালী থানায় আরেকটি মামলা হয়।

চট্টগ্রামে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ সমর কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। ২৭ মে থেকে ১১ জুলাই কারাভোগের পর ১২ জুলাই জামিনে মুক্ত হন সমর চৌধুরী।

সমর কৃষ্ণ চৌধুরী মেয়ে তমালিকা চৌধুরী বলেন, ‘মামলা থেকে থেকে বাবা খালাস পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে। গত মাসে মাদক আইনে করা দুটি মামলা থেকেও খালাস পেয়েছিলেন বাবা।’

তার পরিবার বরাবরই অভিযোগ করে আসছিল, চট্টগ্রাম রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি ড. এসএম মনির-উজ-জামান প্রবাসী সঞ্জয় দাশের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে তাকে ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন।

২০১৮ সালের ১ জুলাই সমর চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে সমর চৌধুরীর মুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া হয় এবং ডিআইজির প্রত্যাহার চাওয়া হয়। ২ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিআইজি মনির-উজ-জামানকে বদলি করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করেছিল।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!