পিতার মৃত্যুর পর সন্তানরা অঝোরে কাঁদবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কর্ণফুলীতে ঘটেছে এক ভিন্ন ঘটনা। সন্তানের দাবি, পিতার লাশ দাফন পরে, আগে সম্পদের ভাগ-বাটোয়ারা হবে।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বিকালে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। পিতার মৃত্যুর পর ছেলেমেয়েদের শোকপ্রকাশ দূরে থাক, সময় মতো দাফনও করতে না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মৃত ব্যক্তির নাম মনির আহমেদ। তার লাশ ফ্রিজিং গাড়িতে রেখে বাড়ির উঠানে ৫০ লাখ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা করতে বসে ছেলেরা। এভাবে বাড়ির উঠানে ১৭ ঘণ্টা পড়ে ছিল লাশ।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২৪ ঘণ্টা তার লাশ পড়ে ছিল অ্যাম্বুলেন্সে। রোববার বিকাল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ দাফন হয়নি।
জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন পদ্মা অয়েল গ্রুপের সাবেক কর্মকর্তা মনির আহমেদ। পরে তার লাশ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়। মৃত্যুকালে তার রেখে যাওয়া সম্পদের ৫০ লাখ টাকা নিয়ে ভাই-বোনের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় রোববার বিকালেও লাশ দাফনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।
বিষয়টি সমাধানে সালিশি বৈঠকও ডাকা হয়। তাতেও সমাধান না হলে ঘটনাস্থলে যায় কর্ণফুলী থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা আরও জানান, মনির আহমেদ চাকরি থেকে অবসরের সময় কোম্পানি থেকে ৫০ লাখ টাকা পেনশন পান। সে টাকা ভাগাভাগি না হওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন করতে দিচ্ছে না তাদের সন্তানরা।
মনির আহমেদের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) অভিযোগ করে বলেন, তাদের বোন বিবি আক্তার তার বাবার অ্যাকাউন্টের ৫০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। ওই টাকার কোনো হিসাব পাচ্ছে না। তাই এলাকার সালিশকারদের বৈঠকে একটা সমাধান করতে চান পিতার লাশ কবরে দেওয়ার আগে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘মনির আহমেদ মারা যাওয়ার পর তাদের সন্তানদের মধ্যে টাকা নিয়ে বিরোধ চলছিল। সেটা এখনো সমাধান হয়নি, আমি ঘটনাস্থলে আছি।’
এ প্রসঙ্গে বড়উঠানের ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম দিদার বলেন, ‘আমি এ সম্পর্কে এখনও কিছু জানি না। তবে কিছুক্ষণ আগে একজন গণমাধ্যমকর্মী জানিয়েছেন, একজন লোক মারা গেছেন। তার রেখে যাওয়া টাকার ভাগাভাগির জন্য লাশ দাফন করতে দিচ্ছে না।’
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দুলাল মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ডিজে