পিছিয়ে পড়েও জার্মানির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার স্বস্তির ড্র

আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র

ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও সার্জিও অ্যাগুয়েরোকে ছাড়া মাঠে নামা আর্জেন্টিনা। ম্যাচটাও ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। তারপরও জার্মানির কাছে হারেনি আর্জেন্টিনা। স্বস্তির ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাতিন আমেরিকান জায়ান্টরা। বুধবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠ সিগনাল ইদুলা পার্কে আর্জেন্টিনাকে আতিথ্য জানায় জার্মানি। দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ে কেউ জিতেনি। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটি ড্র হয়েছে ২-২ গোলে।

এই দুই দেশের ম্যাচ মানেই ফুটবলপ্রেমীদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল। আরেকটু পেছনে ফিরে তাকালে জার্মানির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচ মানেই ১৯৮৬, ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ। জার্মানির মুখোমুখি হওয়া মানেই যেন আর্জেন্টিনার বিদায়। ব্রাজিল বিশ্বকাপের পর আর এই ম্যাচের আগে কেবল একবারই দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জার্মানির মাটিতে খেলতে গিয়ে মেসিকে ছাড়াই ৪-২ গোলে জিতেছিল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

এবার ৫ বছর পর প্রীতি ম্যাচে অংশ নেয় আর্জেন্টিনা-জার্মানি। ম্যাচের ১৫ মিনিটের মাথায় গোল করে জার্মানদের লিড পাইয়ে দেন মিডফিল্ডার সার্জি জিনাব্রি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে জিনাব্রির এটি দশম গোল। ২২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কাই হাভার্টস। জাতীয় দলের হয়ে তরুণ এই মিডফিল্ডারের এটি অভিষেক গোল।

পিছিয়ে পড়েও জার্মানির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার স্বস্তির ড্র 1
শুরুতে পিছিয়ে পড়েও স্বস্তির ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা

২-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। ৬৬তম মিনিটে ব্যবধান কমায়ে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। মার্কোস আকুনার ক্রস থেকে হেডে বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লুকাস আলারিও। ৮৫তম মিনিটে সমতায় ফেরে আর্জেন্টিনা। এবার আলারিওর বাড়ানো বল থেকে গোল করেন অভিষিক্ত লুকাস ওকামপোস। ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় ব্লকবাস্টার ম্যাচটি।

দুই দল মুখোমুখি হলো মোট ২৩ বার। এর মধ্যে আর্জেন্টিনা জিতেছে ১০ বার। জার্মানি জিতেছে ৮ বার। আর ৫টি ম্যাচ ড্র হলো। সবমিলিয়ে মুখোমুখি দেখায় জার্মানির সবচেয়ে বড় জয় ৪-০ গোলে। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে এই ব্যবধানে হারিয়েছিল জার্মানরা। অপরদিকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় জয় ৪-২ গোলের ব্যবধানে। সেটা ২০১৪ বিশ্বকাপের পর, আগের প্রীতি ম্যাচে।

শুরুতে সের্গে জিনাব্রির গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। এরপর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কাই হাভার্টস। তারপরই জেগে উঠে লাতিন জায়ান্টরা। লুকাস আলারিও ব্যবধান কমান। এরপর লুকাস ওকামপোসের গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে অতিথিরা।

অথচ প্রতিপক্ষের মাঠে সেরা দল নিয়ে আসতে পারেন নি লিওনেল স্কালেনি। আর্জেন্টাইন কোচের সেরা একাদশ গড়তে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে দলে মেসি ছিলেন না দলে। সঙ্গে ইনজুরিতে কয়েকজন তারকাই ছিলেন মাঠের বাইরে। তারপরও নতুন চেহারার দলটি মন্দ খেলেনি।

এরমধ্যে জার্মানি শুরুটা যেভাবে করেছিল, মনে হচ্ছিল বড় ব্যবধানেই দল জিতবে। খেলার ১৫তম মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন জিনাব্রি। যিনি অক্টোবরেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে একাই করেছিলেন চার গোল।

খেলার ২২তম মিনিটে আরও এগিয়ে যায় জার্মানি। মার্কোস রোহোর ভুলে বল পেয়ে যান লুকাস ক্লোসতামান। তিনি পাস দেন জিনাব্রিকে। তারপরই বল পেয়ে যান কাই হাভার্টসকে। নিশানা খুঁজে নিতে ভুল করেন নি তিনি। এটিই জার্মানির হয়ে তার প্রথম গোল।

তারপর প্রথমার্ধেই আরও এগিয়ে যেতে পারতো জার্মানরা। যদিও ফিনিশিংয়ের অভাবে উল্লাসে মেতে উঠা হয়নি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।

৬৬তম মিনিটে এসে ব্যবধান কমায় আর্জেন্টিনা। মার্কোস আকুনার ভাসানো ক্রস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে যান লুকাস আলারিও। লাফিয়ে উঠে শুধু মাথাটা ছুঁইয়ে দেন লুকাস আলারিও (১-২)।

খেলার ৮৫তম মিনিটে এসে সমতা ফেরায় ১৯৮৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। গোলদাতা ওকামপোস। আনন্দে মেতে উঠে আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। সেরা তারকা মেসিকে ছাড়া এমন ড্র, জয়ের স্বস্তিই যেন এনে দিয়েছে!

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!