পিঙ্ক লেডি পুরস্কার পেলেন চট্টগ্রামের দুই আলোকচিত্রী, চার বিভাগে সেরা বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা ‘পিঙ্ক লেডি ফুড ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতার এবারের আসরে চারটি বিভাগে সেরার পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের আলোকচিত্রীরা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দুজন আলোকচিত্রী দুটি করে বিভাগে মোট চারটি পুরস্কার জিতেছেন। এ দুজন আলোকচিত্রী হলেন শোয়েব ফারুকী ও ফয়সাল আজিম। সম্পর্কে তারা আপন মামা-ভাগ্নে। আলোকচিত্রে ফয়সাল আজিমের হাতেখড়িও মামা শোয়েব ফারুকীর কাছেই।

‘দ্য ওয়েট ইজ ওভার’ শিরোনামে চট্টগ্রামের একটি মহিলা মাদ্রাসায় লাইন ধরে শিক্ষার্থীদের খাবার নেওয়ার ছবি তুলে ‘ফুড ফর লাইফ’ বিভাগে তিনি উচ্চ প্রশংসা পেয়েছেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শোয়েব ফারুকী।
‘দ্য ওয়েট ইজ ওভার’ শিরোনামে চট্টগ্রামের একটি মহিলা মাদ্রাসায় লাইন ধরে শিক্ষার্থীদের খাবার নেওয়ার ছবি তুলে ‘ফুড ফর লাইফ’ বিভাগে তিনি উচ্চ প্রশংসা পেয়েছেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শোয়েব ফারুকী।

খাবার বিষয়ে সবচেয়ে বড় আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে ইংল্যান্ডের ফুড অ্যাওয়ার্ডস কোম্পানির এই আয়োজন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিশ্বের ১০০টি দেশ থেকে প্রায় ৯০ হাজারের বেশি ছবি জমা পড়েছিল এবারের প্রতিযোগিতায়।

এই প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের সন্তান দেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শোয়েব ফারুকীর তোলা দুটি ছবি দুই বিভাগে ‘উচ্চ প্রশংসা’ পেয়েছে। তিনি ২০১৭ সালের ‘পিঙ্ক লেডি ফুড ফটোগ্রাফার অব দ্যা ইয়ার’ পুরস্কার বিজয়ী।

জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া চট্টগ্রামের একটি রেস্তোঁরায় এক ব্যক্তির খাবারের ছবি তুলে ফয়সাল আজিম ‘পলিটিক্স অব ফুড’ বিভাগে জিতেছেন দ্বিতীয় পুরস্কার।
জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া চট্টগ্রামের একটি রেস্তোঁরায় এক ব্যক্তির খাবারের ছবি তুলে ফয়সাল আজিম ‘পলিটিক্স অব ফুড’ বিভাগে জিতেছেন দ্বিতীয় পুরস্কার।

এবারের আসরে ‘দ্য ওয়েট ইজ ওভার’ শিরোনামে চট্টগ্রামের একটি মহিলা মাদ্রাসায় লাইন ধরে শিক্ষার্থীদের খাবার নেওয়ার ছবি তুলে ‘ফুড ফর লাইফ’ বিভাগে তিনি উচ্চ প্রশংসা পেয়েছেন। অন্যদিকে ‘লাইফ ইজ নট আ বেড অব রোজেস’ শিরোনামে দৌলতদিয়া যৌন পল্লীর এক নারীর রান্না করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেও পেয়েছেন প্রশংসা।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের তরুণ আলোকচিত্রী ফয়সাল আজিমের তোলা ‘ফুড আফটার ওয়ার্ক’ শিরোনামের একটি ছবি ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম ফুড ফর লাইফ’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার জিতেছে। ওই ছবির বিষয়বস্তু ছিল— ইট ভাটার ধুলোময় নোংরা পরিবেশে টুকরির ওপর টিফিন ক্যারিয়ারে রাখা শ্রমিকদের দুপুরের খাবার।

‘লাইফ ইজ নট আ বেড অব রোজেস’ শিরোনামে দৌলতদিয়া যৌন পল্লীর এক নারীর রান্না করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেও শোয়েব ফারুকী পেয়েছেন প্রশংসা।
‘লাইফ ইজ নট আ বেড অব রোজেস’ শিরোনামে দৌলতদিয়া যৌন পল্লীর এক নারীর রান্না করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেও শোয়েব ফারুকী পেয়েছেন প্রশংসা।

ফয়সাল আজিমের ‘ফ্লাডেড হোটেল’ শিরোনামে আরও একটি ছবি ‘পলিটিক্স অব ফুড’ বিভাগে জিতেছে দ্বিতীয় পুরস্কার। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া চট্টগ্রামের একটি রেস্তোঁরায় এক ব্যক্তির খাবারের ছবি তুলে ওই পুরস্কার জেতেন তিনি।

পিঙ্ক লেডি ফুড ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতার এবারের আসরে এছাড়া ঢাকার চাঁদ উদ্যান বস্তিতে একটি শিশুর পানি সংগ্রহের ছবি তুলে আলোকচিত্রী কে এম আসাদ ‘পলিটিক্স অব ফুড’ বিভাগে সেরার পুরস্কার জিতেছেন। রূপকথা রায় বাড়ইয়ের তোলা বাড়ির উঠোনে বসে একটি শিশুর মাছ কাটার দৃশ্য উপভোগের ছবি ‘ইয়াং-১০ অ্যান্ড আন্ডার’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার জিতেছে। কারখানায় একজন কর্মীর সেমাই শুকানোর দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে জয়জিত দাস জিতেছেন ‘ইয়াং ১৫-১৭’ বিভাগে সেরার পুরস্কার। ঢাকার লোকনাথ মন্দিরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাখের উপবাস অনুষ্ঠানে এক মুসলিম নারীর মিষ্টান্ন বিতরণের ছবি জিতেছে ‘ফুড ফর সেলিব্রেশন বিভাগে’ দ্বিতীয় পুরস্কার। সেটি তুলেছেন মাহবুব হোসেন খান।

একটি হাসপাতালের ফাঁকা ক্যাফেটোরিয়ায় দুজনের খাবারের ছবি তুলে ‘ফুড অ্যট দ্য টেবিল’ বিভাগের দ্বিতীয় পুরস্কারটি জিতেছেন আলোকচিত্রী ইব্রহিম ইকবাল। ঢাকার রাস্তায় বৃষ্টির মধ্যে ফল বিক্রির ছবির জন্য আলোকচিত্রী সৈয়দ মাহবুবুল কাদের জিতেছেন স্ট্রিট ফুড বিভাগের দ্বিতীয় পুরস্কার। ‘হ্যাপি উইথ ফুড’ শিরোনামে আলোকচিত্রী এম ইউসুফ তুষারের তোলা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে খাবার পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিশুদের ছবি জিতেছে ফুড ফর লাইফ বিভাগের দ্বিতীয় পুরস্কার।

শুঁটকি পল্লীতে কর্মরত এক নারীর ছবির জন্য সামিহা হোসেন জিতেছেন ‘ইয়াং ১১-১৪’ বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার। একই বিভাগে শুঁটকি পল্লীতে কর্মরত শিশুদের ছবির জন্য তৃতীয় পুরস্কারটিও গেছে সামিহা হোসেনের হাতে।

ঢাকার ফুটপাতে এক পথশিশুর খাবার রান্নার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে কাজী মুশফিক ‘অন দ্য ফোন’ বিভাগে পেয়েছেন ‘উচ্চ প্রশংসার’ স্থান। একই বিভাগে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে মাস্ক পরা এক মুরগি বিক্রেতার ছবির জন্য প্রশংসিত হয়েছে আলোকচিত্রী পিনু রহমানের ‘মাস্ক অব সরো’ শিরোনামের ছবিটি।

আলোকচিত্রী ইব্রাহিম ইকবালের তোলা অনাথ আশ্রমের মেঝেতে বসে এক শিশুর সকালের নাস্তা খাওয়ার ছবি ‘পলিটিক্স অব ফুড’ বিভাগে ‘উচ্চ প্রশংসা’ পেয়েছে। একই বিভাগে ‘টিয়ারস অব ক্রপ’ শিরোনামে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ধু ধু চরে পরিণত হওয়া কৃষিজমির ছবি তুলে আলোকচিত্রী সারোয়ার অপু ‘উচ্চ প্রশংসা’ পেয়েছেন।

বন্যায় ডুবে যাওয়া বাড়ির উঠানে চৌকির উপরে এক নারীর রান্নার ছবির জন্য ‘ফুড ইন অ্যাকশন’ বিভাগে ‘উচ্চ প্রশংসা’ পেয়েছেন আলোকচিত্রী কে এম আসাদ। তিনি ২০২০ সালে ‘পিঙ্ক লেডি ফুড ফটোগ্রাফার অব দ্যা ইয়ার’ পুরস্কার জিতেছিলেন। আলোকচিত্রী আবির আব্দুল্লাহর তোলা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে একটি শিশুর পানীয় জল সংগ্রহের ছবির ‘ফুড ফর লাইফ বিভাগে’ উচ্চ প্রশংসা পেয়েছে। আলোকচিত্রী জাকিরুল মাজেদ কনকের তোলা খরায় ফেটে যাওয়া জমির ভেতর দিয়ে নারী ও শিশুদের পানীয় জল সংগ্রহের ছবিও ‘ফুড ফর লাইফ’ বিভাগে পেয়েছে ‘উচ্চ প্রশংসা’।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!