পাহাড় কেটে সমতল বানাতে মরিয়া বায়েজিদের পাহাড়খেকোরা

চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার ভেড়া ফকিরের পাহাড়ে হাত পড়েছে পাহাড়খেকোদের। পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন আসলে গা ঢাকা দিলেও অভিযান কমে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দিনে-দুপুরেই কাটা হচ্ছে পাহাড়। সম্প্রতি একটি চক্রের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর জরিমানাও করেছে তিন লাখ টাকা।

অভিযোগ রয়েছে, চুক্তির বিনিময়ে ভেড়া ফকিরের মাজারের পশ্চিম এলাকায় পাহাড় কাটছে পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকার আমির হোসেনের পুত্র সাবের আহমেদসহ কয়েকজন। ওই এলাকায় একটি পক্ষের জায়গা দখল করে দিতে মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে এই গ্রুপটি কেটে ফেলছে পাহাড়ের বড় বড় অংশ ও টিলা। পাহাড় কাটার সময় চাঁদা দাবি করে তাদেরকে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়।

সংঘর্ষের পর কিছু লোকজনকে মারধর ও চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে বায়েজিদ থানায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন সাবের আহমেদ। তার দুইদিন আগে একই অভিযোগ এনে নাসির নামে এক ব্যক্তির ঘরের কেয়ারটেকারকে দিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় আরও একটি মামলা দায়ের করানো হয়।

এদিকে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে দেখা গেছে, সাবের আহমেদের নেতৃত্বে পাহাড় কাটছে বেশ কিছু যুবক। এমন একটি ভিডিও চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে এসেছে।

এর আগে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর বায়েজিদ থানার পশ্চিম ষোলশহর মৌজায় ভেড়া ফকিরের পাহাড়ের বিএস ১৫৩ নম্বর দাগে পাহাড় কাটার অপরাধে ৯ ব্যক্তিকে বিভিন্ন অংকের টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর। ওইদিন ৯ জনকে মোট ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বায়েজিদ থানার ভেড়া ফকিরের মাজার এলাকায় পাহাড় কাটায় জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবের আহমেদ বলেন, ‘পাহাড় কাটার অভিযোগ সত্য না। আমি ২০২০ সালে দলিলমূলে বিশ শতক জায়গা নিই হাসেম গং থেকে। এই জায়গায় কিছু অংশ টিলা ও সমতল। সেখানে সম্প্রতি একটি টিনের ঘরও নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলো দেখাশুনা করতে কেয়ারটেকার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

একটি পক্ষ বিভিন্ন সময় আমার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। টাকা না দেওয়ায় তারা আমার কাজে বাধা দেয়। পরে আমার কেয়ারটেকারকে মারধর করে। এ ঘটনায় গত ৭ জানুয়ারি ৮ জনের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।’

পাহাড় কাটা যায় কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সাবের আহমেদ কোনো মন্তব্য না করে বলেন, ‘আমার ঘর দখল করতে তারা আমার আমার বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দিয়েছে। ওই মামলায় এখনও জামিন নেওয়া হয়নি। জামিন নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন- ‘সাবের আহমেদের দায়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় ১ ও ২ নম্বর ছাড়া বাকি সবাই আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। অন্য মামলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।’

মুআ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!