পাসকার্ড জটিলতায় জেটিতে কাস্টমসের কাজ ৩ ঘণ্টা বন্ধ

চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপত্তা বিভাগের পাসকার্ড জটিলতায় হেনস্থার শিকার হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের আনস্টাফিং শাখার কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার (১৭ সেম্পেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেটে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার জের ধরে জেটিতে আনস্টাফিং শাখার কর্মকর্তারা দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখেন।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের আনস্টাফিং শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে সদ্য বদলিকৃত কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৬ জন কর্মকর্তার বন্দরের পাসকার্ড ইস্যুর জন্য বায়োমেট্রিক সম্পন্ন হয়। এসব কর্মকর্তাদের কয়েকজন সোমবার বায়োমেট্রিক করার পর মঙ্গলবার সকালে পাসকার্ড দেওয়ার কথা ছিলো।

মঙ্গলবার সকালে একটি গাড়িতে করে চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করার সময় বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা আতিক তাদের পাসকার্ড দেখতে চান। এ সময় ৪জন কর্মকর্তার সথে পাস কার্ড থাকলেও কাস্টম হাউজে সদ্য পদায়িত ৩ কর্মকর্তার পাসকার্ড না থাকার অজুহতে তাদের বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করা যাবে না বলে জানায়।

বুধবার বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করা হয়েছে বলা হলেও নিরাপত্তা কর্মকর্তা আতিক পাসকার্ড ছাড়া কোনভাবেই প্রবেশ করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। যেসব কর্মকর্তা পাস কার্ড পায়নি তাদের নিয়ে বন্দরের নিরাপত্তা অফিসে গেলে দুপুর ১২ টার পাস কার্ড দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

রাজস্ব কর্মকর্তা সাজ্জাদুল ইসলাম আরো জানান, নতুন পদায়িত কর্মকর্তারা জেটিতে প্রবেশ করতে না পারলে পণ্য খালাস দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়, একথা বলার পরও কর্ণপাত করছিলেন না বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগরে কর্মকর্তা আতিক।

সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, `বিষয়টি কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার সাধণ কুমার কুণ্ডকে জানানো হলে তিনি তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে আসেন। আতিককে সাধন কুমার কুন্ডের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বললেও তার (বন্দরের) উর্ধতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ব্যতিরেকে পাসকার্ড ছাড়া জেটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয়।’

এ ঘটনার পর কাস্টমসের আনস্টাফিং ও গেট ডিভিশন শাখার কর্মকর্তারা দুপুর দেড়টা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখেন। দুপুরের পর দুই কর্মকর্তাকে পাসকার্ড দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) মেজর মোহাম্মদ রেজাউল হক বলেন, ‘বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা আতিক কাস্টম কর্মকর্তাদের কাছে আইডি কার্ড দেখতে চেয়েছিলো। পাসকার্ড কেন দেখতে চাওয়া হলো এটিই তারা জানতে চায়। কাস্টম কর্মকর্তারা পরে ইচ্ছে করেই কাজ বন্ধ করে রাখে।’

বাকাএভ চট্টগ্রাম সিলেট ও কুমিল্লা অঞ্চলের সভাপতি আমজাদ হাজারী বলেন, ইতোপূর্বে ড্রেস কোড নিয়ে বন্দরে একাধিকবার বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীদের হাতে কাস্টম কর্মকর্তার হেনস্থার শিকার হয়। মঙ্গলবারও পাসকার্ড ইস্যুতে এমন ঘটনা ঘটলো। বিষয়টি নিয়ে বুধবার সকালে কাস্টমসের জেটিতে বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভা আহ্বান করেছি। ওই সভায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার (জেটি) সাধন কুমার কুণ্ড বলেন, ‘বন্দরের নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা আতিক পাসকার্ড ছাড়া যখন কাস্টমস কর্মকর্তাদের বন্দরের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলনা তখন আমি ঘটনাস্থলে আসি। কাস্টমস কর্মকর্তারা ভেতরে প্রবেশ করতে না পারলে পণ্য চালান খালাস বিলম্বিত হবে এমন কথা বলার পরও কর্ণপাত করছিলো না নিরপত্তা কর্মকর্তা আতিক। এক পর্যায়ে তিনি ‘ডোন্ট শাউট’ বলে চিৎকার করে উঠেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

সাধন কুমার কুণ্ড বলেন, ‘পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কাস্টম কমিশনারকে জানাই। ওই সময় ৪ নম্বর গেটে দুপুর পর্যন্ত কাস্টমস হাউজের কাজ বন্ধ ছিলো।’

এসসি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!