পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘোরে, চাঁদা নেয়

বান্দরবানে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শাহিদুল

বান্দরবান সেনা রিজিয়নের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল খন্দকার মো. শাহিদুল এমরান বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো অনেক অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা ঘোরাফেরা করছে। তার সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। শান্তি চুক্তির ধারা অনুসারে এরই মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ ক্যাম্প অপসারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২২ বছর পূর্তি উদযাপনে বান্দরবানের স্থানীয়র রাজার মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিয়ংইয়ং ম্রোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান সেনা রিজিয়নের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল খন্দকার মো. শাহিদুল এমরান । বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার, পৌরমেয়র মোহম্মদ ইসলাম বেবী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী এটিএম কাউছার হোসেন প্রমুখ।

খন্দকার মো. শাহিদুল এমরান আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরে চারের অধিক আঞ্চলিক দল গঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটা দলের এক একটা সশস্ত্র ক্যাডার রয়েছে। যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চায়। এলাকা কর্তৃত্ব বজায় রাখতে গিয়ে ভাতৃঘাতি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তারা।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী এটি এম কাউছার হোসেন বলেন, ভূমি কমিশন আইনের বাস্তবায়নের জন্য বিধিমালা দরকার। আরও অনেক অমিমাংসিত বিষয় আছে যেগুলো বিধিমালার কারণে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয়ে ১৭টি বিধিমালা তৈরির কাজ চলছে। এগুলো শেষ হলে এ অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসবে। যে আশা নিয়ে এই শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেই প্রত্যাশা অর্জিত হবে বলেও জানান তিনি।

আলোচনা সভায় বক্তারা শান্তি চুক্তির পরও এখনও পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় বলে জানান। এছাড়াও সংঘাতের বিনিময়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলেও জানান তারা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘোরে, চাঁদা নেয় 1

আলোচনা সভা শেষে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয় বই, স্কুল ব্যাগ। এছাড়াও দরিদ্র শীর্তাতদের মাঝে বিতরণ করা হয় কম্বল। পরে গাইনি, শিশু, চর্ম, যৌন, ডেন্টাল , মেডিসিন এবং সার্জিকেল বিষয়ে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা প্রদান ও বিনামূলের ওষুধ বিতরণ করেন।

আলোচনা সভার আগে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় এক বর্ণাঢ্য র্যালি। র্যালিতে পার্বত্য এলাকার ১১ টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ বর্ণিল পোশাক ও ব্যানার নিয়ে অংশ নেয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় রাজার মাঠে আলোচনা সভায় যোগ দেয় ।

এদিকে শান্তি চুক্তি দিবসকে ঘিরে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করেনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!