‘পার্বত্য চট্টগ্রামে শীঘ্রই বিরোধপূর্ণ ভূমি নিষ্পত্তির কাজ শুরু’

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ার উল হক রলেছেন, ‘আইনগত বিধিমালাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। বিধিমালা পাশ হলেই আমরা শুনানির জন্য প্রস্তুতি নিব। এরপর অচিরেই আমরা বিরোধপূর্ণ ভূমির নিষ্পত্তির কাজ শুরু করতে পারবো। যতদিন কমিশন থাকবে, ততদিন ভূমি কমিশন বিরোধপূর্ণ ভূমির দরখাস্ত চলমান থাকবে। স্থায়ী লোক নিয়োগে আইনগত কিছু ব্যাপার আছে। সাময়িকভাবে কাজ এগিয়ে নিতে সরকার অবশ্যই আমাদের সহায়তা করবে এবং নিষ্পত্তির কাজ শুরু হলে প্রয়োজনে সরকার জনবল দিয়ে সহায়তা করবে।’

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাঙামাটি সার্কিট হাউজ হলরুমে অনুষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের পঞ্চম বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। বৈঠক শেষে আগামী অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ পরবর্তী বৈঠকের দিন ধার্য্য করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ার উল হকের সভাপতিত্বে কমিশনের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ প্রতিনিধি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য গৌতম চাকমা, রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, খাগড়াছড়ি মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, বান্দরবান বোমাং সার্কেল চীফ উ চ প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সচিব আলী মনসুর।

বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা উপস্থিত ছিলেন না। অবশ্য আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম চাকমা আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন। বৈঠক শেষে কমিশনের সদস্যগণ অচিরেই বিরোধপূর্ণ ভূমির নিষ্পত্তির কাজ শুরু করতে পারবেন বলে আশাব্যক্ত করেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, ‘হয়তো সবার আশা আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বিধিমালার বিধানগুলো নাও হতে পারে। কিন্তু আইনের যে বিধানা বলি আছে, যদি তার সম্পূরক কিছু সাহায্য পাই তাহলে আশা করছি কয়েক মাসের মধ্যে শুনানির পর্যায়ে যেতে পারবো। আমরা যারা সদস্য আছি, যতদ্রুত পারি শুনানির পর্যায়ে যাব এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ শুরু করতে পারবো। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, আঞ্চলিক পরিষদ থেকে যেসব প্রস্তাব সরকারের কাছে গেছে এবং আরও যেতে পারে সেগুলো যেন সরকার যথাযথভাবে গুরুত্ব দিয়ে বিধিমালা করে।’

বান্দরবান বোমাং সার্কেল চিফ উ চ প্রু চৌধুরী বলেন, ‘আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি বিধিমালা হয়ে যাবে। তারপর কাজ শুরু করবো, শুরু হলে শেষ করতে বেশি দেরি হবে না।’

উল্লেখ্য, ভূমি কমিশন বিরোধপূর্ণ ভূমির আবেদন আহ্বান করলে দুই দফায় ভূমি কমিশনে তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) থেকে ৩ হাজার ৯৩৩টি আবেদন জমা পড়ে। তন্মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলায় ২ হাজার ৮৩৯টি, রাঙামাটি জেলায় ৭৬৯টি, বান্দরবান জেলায় ৩২৫টি। কমিশনে বর্তমানে আবেদন জমা আছে ২২ হজার ৯০টি।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!