পারকি সৈকতের বারোটা বাজছে নির্বিচার বালু উত্তোলনে

আনোয়ারা

পারকি সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় বারশত ইউনিয়নের প্রভাবশালী চক্র। নেই প্রশাসনের নজরদারি। সৈকতের থেকে বড় পাইপ দিয়ে সে বালু দিয়ে চলছে জমি ভরাটের কাজ। এতে সৌন্দর্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও সৈকত ঝুঁকির মুখেও পড়ছে।

শনিবার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পারকি সৈকতের দক্ষিণ পার্শ্বের চর থেকে সৈকতে বড় পাইপ দিয়ে ৫-৬ শ মিটার এলাকা জুড়ে বালু নিয়ে চলছে জমি ভরাটের কাজে। বালু নেওয়ার জন্য কাটা হয়েছে বাঁধও। সেখানে রয়েছে ইঞ্জিনচালিত একটি ড্রেজার। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় বালু উত্তোলনের কাজ। এর ফলে যেমন সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, তেমনি সৈকত ঝুঁকির মুখেও পড়ছে।

শহর থেকে বেড়াতে আসা মোহাম্মদ সাকিব বলেন, ‘পারকিতে অনেকবার এসেছি, চরে জমে আছে কাঁদা মাটি, ময়লা অর্বজনা তার উপরে বালুর পাইপ। এবারের মত অবস্থা আগে ছিলো না। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সৈকতের সৌন্দর্য। এসব বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘কর্ণফুলী নদী থেকে বালু তুলে এনে এখানে ভরাট করছে। বিচ এলাকা থেকে তোলার কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

পারকি সৈকতের বারোটা বাজছে নির্বিচার বালু উত্তোলনে 1

উল্লেখ্য, উপকূল রক্ষা করতে বনবিভাগ ১৯৯৩-৯৪ এবং ২০০২ সালে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৮০ হেক্টর জায়গাতে ঝাউগাছ লাগায় পারকি ও আশপাশের এলাকায়। গাছ বড় হতে থাকলে আস্তে আস্তে স্থানীয়দের কাছে এটি ঝাউবাগান বলে পরিচিতি পেতে শুরু করে। আর্কিটেকচারাল পদ্ধতিতে লাগানো এ গাছ বড় হলে পরবর্তীতে পারকি পর্যটন এলাকা হিসাবে রূপ লাভ করে। এভাবে দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে এ সৈকত।

পর্যটন মন্ত্রণালয় পারকি সমুদ্র সৈকতকে আধুনিক বিচ ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পর্যটন করপোরেশন তিন বছর মেয়াদি পারকি বিচে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে। প্রকল্পটির মধ্যে রয়েছে ১৪টি বহুতল বিশিষ্ট আধুনিক কটেজ, একটি মানসম্মত বার, দুটি পিকনিক শেড, দুটি কিডস কর্নার জোন, আধুনিক রেস্তোরাঁ, কনভেনশন হল, চেঞ্জিং ক্লজেট ও ওয়েটিং রুম। কার পার্কিং জোন সুবিধাও রাখা হয়েছে। বর্তমানে পর্যটন কমপ্লেক্স তৈরির জন্য নির্দিষ্ট ১৩ একর জায়গা নির্ধারিত করেছে পর্যটন করপোরেশন। ১৩ একর জায়গায় ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ের আধুনিক পর্যটন কমপ্লেক্স বাস্তবায়ন হলে পারকি বিচ হবে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!