পাঠানটুলীতে শিশুকে যৌন নিপীড়ন: মামলা করলেন প্রধান শিক্ষক
পাঠানটুলি খান সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর উপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন স্বয়ং প্রধান শিক্ষক।
বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে স্কুলের ফটক খোলার সময়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নৈশ প্রহরী দীপক দে পলাতক রয়েছেন। তিনি নগরীর ফইল্যাতলী এলাকার ননীগোপালের ছেলে।
পাঠানটুলি খান সাহেব সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, দীপক দে অস্থায়ীভাবে দৈনিক মজুরীতে নৈশ প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালে স্কুলে চুরির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। দীপক দে কারাভোগের পর জামিনে বের হয়। দুই বছরের মাথায় ওই মামলায় আদালত থেকে খালাস পেয়ে সে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার নিয়োগ পায়।
এ ব্যাপারে পাঠানটুলি খান সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিপি মহাজন বলেন, সকালে চারজন শিক্ষার্থীর সাথে নৈশপ্রহরী দীপক নিপীড়নমূলক আচরণ করে। ওই তিনজন দৌঁড়ে পালিয়ে দোতলা থেকে নিচে চলে এলেও এক শিক্ষার্থী আসতে পারেনি। পরে শিশুটি নিচে এসে কান্নাকাটি করলে আমরা কারণ জানতে পারি।
ইতোমধ্যে দীপক স্কুল থেকে পালিয়ে যান। এ সময় অভিভাবক ও এলাকাবাসীদের ভিড় জমেছিলো। আমি বাদি হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করেছি। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে নগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) আশিকুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ঘটনা শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। এর আগেই দীপক পালিয়ে যায়। আমাদের একাধিক টিম তাকে আটকের চেষ্টা করছে।
ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন বলেন, ‘পাঠানটুলি খান সাহেব সরকারি প্রাথমিকে বিদ্যালয়ের এক শিশু শিক্ষার্থীর উপর নিপীড়নের ঘটনায় স্কুলের প্রধানশিক্ষক লিপি মহাজন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা অভিযুক্ত দিপক দেকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’
জানা গেছে, স্কুল ভবনটিতে সকাল ৭-১১টা পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চলে। দুপুর বারোটা থেকে সিটি কর্পোরেশন পরিচালত মাধ্যমিক বিভাগের পাঠদান হয়। দীপক ভবনটির নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন।
ইমদাদ হোসেন নামে এক অভিভাবক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, স্কুলে শিশু শিক্ষার্থীর উপর নিপীড়নের খবর পেয়ে ছুটে আসি। আমার মেয়ে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। শিশুটির অভিভাবক এসে তাকে বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। তবে উপস্থিত অভিভাবকরা এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখালে প্রশাসনের টনক নড়ে। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে অভিযুক্ত দীপককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এফএম/এসএস