পাঠানটুলীতে নির্বাচনী সহিংসতায় ঝরে গেল প্রাণ, বাহাদুরের তীর কাদেরের দিকে

চট্টগ্রাম নগরের ২৮ নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডের মোগলটুলী এলাকায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে আজগর আলী বাবুল সর্দার (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাবলুকে নিজের কর্মী দাবি করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর এর জন্য বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদেরের সমর্থকদের দায়ী করছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল কাদের বলছেন, পরিকল্পিতভাবে বাবলুকে হত্যা করে নির্বাচনী মাঠ খালি করতে চাচ্ছেন বাহাদুর। এই হত্যার জন্য মোস্তফা কামাল টিপু নামে একজনকে দায়ী করছেন কাদের।

এদিকে এ ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ আছে বলেও জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) রাত নয়টার দিকে নগরের পাঠানটুলী এলাকার মগপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে আব্দুল কাদের মগপুকুর পাড়ে তাহের ম্যানশন নামে একটি বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। নজরুল ইসলাম বাহাদুর তার সমর্থকদের নিয়ে বাসাটি ঘিরে রেখে দফায় দফায় সেই বাসায় হামলা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ আব্দুল কাদেরের।

জানা গেছে, রাত ৯ টার সময় ওই এলাকায় দুই পক্ষের সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। অতর্কিতভাবে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর কর্মীরা কাদেরের কর্মীদের হামলা চালায়। এর আগে থেকেই কাদের তাহের ম্যানশনে ছিলেন। হামলা শুরু হলে তারা ওই ভবনের গেট লাগিয়ে দেন। তখন থেকেই সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন কাদের।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর অভিযোগ করে বলেন, মগপুকুর এলাকায় গণসংযোগ করার সময় বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল কাদেরের অনুসারীরা শাটার গান নিয়ে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে স্থানীয় মহল্লার সর্দার আজগর আলী বাবুল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে এ সময় যুবলীগ কর্মী মাহবুবও গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্রোহী প্রার্থী সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আবদুল কাদের বলেন, আমার কর্মী সমর্থক নিয়ে আবু শাহ মাজার এলাকায় গণসংযোগ করছিলাম। আমি দোতলা একটি বাসায় অবস্থান করার সময়ে নিচে থাকা আমরা অনুসারীদের আচমকা ধাওয়া করে নজরুল ইসলাম বাহাদুরের অনুসারীরা। এরপর তারা গুলি ছুঁড়লে আমি বাসার ভেতরেই অবস্থান করি। যে মারা গেছে সে তাদের কর্মী। কিন্তু গত নির্বাচনেও সে আমার কর্মী ছিল।

নজরুল ইসলাম বাহাদুরের সাথে প্রচারণায় থাকা মোস্তফা কামাল টিপুর সাথে স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে আগে থেকেই বাবুলের বিরোধ ছিল জানিয়ে এই হত্যার জন্য টিপুকে দায়ী করেন আব্দুল কাদের। প্রসঙ্গত টিপু আলোচিত মিন্টু হত্যামামলারও আসামি।

হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়ে কাদের বলেন, ‘যেখানে হত্যা হয়েছে সেখানে ৮-১০ টা সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। সেখান থেকে ফুটেজ নিলেই পুরো ঘটনা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, আমি সকালে নির্বাচন কমিশনে তাদের বিরুদ্ধে আমার পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ দিয়েছি। যার কারণে তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক আমির হোসেন বলেন, মাহবুব নামের একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আসলেও তাকে আবার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চমেকে ভর্তি না করে মেডিকেল সেন্টার নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জেনেছি।

এদিকে ঘটনার পর পর আব্দুল কাদেরের বাসায়ও হামলা চালিয়েছে নজরুল ইসলাম বাহাদুরের সমর্থকরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় পুলিশি সহায়তা চাইলেও এখন পর্যন্ত কাদেরকে উদ্ধারে সেখানে কোন পুলিশ ফোর্স যায়নি। তবে কাদেরের বাসভবনে পুলিশের একটি দল পৌঁছেছে।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!