পাইকারিতে দাম পড়লেও পেঁয়াজের খুচরা বাজার লাগামহীন

শুক্র-শনি দুই দিন অস্থিরতার পর রোববার থেকে পাইকারি বাজারে দাম পড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের। শনিবার পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা। সেই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৬৯ টাকা পর্যন্ত। তবে পাইকারি বাজারে দাম কমলেও তার প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। ব্যবসায়ী নেতারা আশ্বস্ত করে বলছেন শিগগিরই দাম নাগালে আসবে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজও খালাস করছেন খাতুনগঞ্জের শ্রমিকরা। ভারতীয় পেঁয়াজের পাইকারি দর ৪৬ টাকা। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের পাইকারি দর ৪২ টাকা।

খাতুনগঞ্জ পেঁয়াজ আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি আফসার উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভারতের উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্রসহ কয়েকটি প্রদেশে সাম্প্রতিক বন্যার অজুহাতে পেয়াজের রপ্তানি মূল্য বাড়ানোয় বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ে। কারণ বাংলাদেশের আমদানিকৃত পেঁয়াজের ৯০ শতাংশের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয় ভারত থেকে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আমদানিকারকরা এবার চীন, মিয়ানমার, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করছেন।’

তিনি আরও জানান, দুই মাসের ব্যবধানে ভারত দুই দফা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। শেষ দফা ভারত সরকার মেট্রিকটন প্রতি ‘রপ্তানি মূল্য’ নির্ধারণ করেছে ৮৫২ মার্কিন ডলার। এর আগে ১৫০ থেকে ২০০ ডলার মূল্যমানের পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছিল ৩৫০-৪০০ ডলারে। যার ফলে খাতুনগঞ্জে যেখানে ১৫-২০ টাকা প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি করতো সেখানে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছিল ৩২-৩৬ টাকা। সর্বশেষ তা গিয়ে ঠেকে ৫৬ টাকায়। তবে দাম করতে শুরু করেছে।

খাতুনগঞ্জ পেঁয়াজ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, শুক্র ও শনিবার দাম বাড়তি ছিল। এখন কমতে শুরু করেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে কিনেছিল বলে খুচরা বাজারে দাম কমতে সময় লাগছে। আজ (১৬ সেপ্টেম্বর) যেহেতু ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৬ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৪২ টাকা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে তা খুচরা বাজারে গিয়ে স্থিতিশীলতা আনবে।

বহদ্দারহাট বাজারের মুদি দোকানদার রাশেদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কেনা বেশি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। খাতুনগঞ্জ থেকে প্রতিকেজি ৫৬ টাকা দরে শনিবার পেঁয়াজ কিনেছি। এখানে নিয়ে আসতে তা প্রায় ৬০ টাকা খরচ পড়ছে। আমরা ৬৪ টাকা বিক্রি করছি। যারা বহদ্দারহাট থেকে ১৫-২০ কেজি কিনে পাড়ার দোকানে বিক্রি করেন, তাদের আরও খরচ ও লভ্যাংশ যুক্ত হয়ে তার মূল্য দাঁড়ায় আরো বেশি।’

পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা নিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দুঃখজনক। আমরা মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দিয়েছে দ্রুত বাজার স্থিতিশীল করতে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। তার মধ্যে প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে খোলাবাজারে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করা এবং পেঁয়াজের আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য সাধন।

এফএম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!