পশ্চিমবঙ্গে ক্ষোভের মুখে রাউজানের এমপি ফজলে করিম, ঢুকতে বাধা

'রাজাকার' এবং 'গণহত্যাকারী' আখ্যা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মধ্যমগ্রামে বিজেপির বিক্ষুব্ধ সদস্যদের হাতে নিগৃহীত হলেন চট্টগ্রামের রাউজানের সংসদ সদস্য ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। রাউজানের এই সাংসদকে ‘রাজাকার’ এবং ‘গণহত্যাকারী’ আখ্যা দিয়ে, কালো পতাকা নিয়ে সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি সমর্থকরা।

পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বরাতে জানা গেছে, মধ্যমগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক রথীন ঘোষ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকেও হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। পরে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এ অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ফজলে করিম চৌধুরী। তবে এই বিষয়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি।

https://www.youtube.com/watch?v=hvHYmMSLP7M

মধ্যমগ্রাম ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার একটি শহর।

ভারতের বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বাংলা সংস্করণ এইসময় ডট কমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভারতের মধ্যমগ্রামের নজরুল মঞ্চে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মাস্টারদা সূর্যসেন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের সাংসদ করিম চৌধুরীর। কিন্তু তার সেখানে পৌঁছানোর আগেই তার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে একটি সংগঠনের বিক্ষুব্ধ সদস্যরা। অভিযোগ, তারা সকলেই বিজেপি সমর্থিত।

সাংসদকে ‘রাজাকার’ এবং ‘গণহত্যাকারী’ আখ্যা দিয়ে, কালো পতাকা নিয়ে সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে উপস্থিত হন প্রায় জনা পঞ্চাশেক বিজেপি সমর্থক। তাদের দাবি, অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত হলেও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশের সাংসদকে তারা যোগ দিতে দেবেন না।

সাংসদকে 'রাজাকার' এবং 'গণহত্যাকারী' আখ্যা দেয় একদল বিক্ষোভকারী
সাংসদকে ‘রাজাকার’ এবং ‘গণহত্যাকারী’ আখ্যা দেয় একদল বিক্ষোভকারী

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জমায়েতকারীদের অভিযোগ, ‘এই সাংসদ বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা চালিয়েছে তাই তারা চান না ভারত থেকে তাকে কোনো সংবর্ধনা দেওয়া হোক, তাই তারা জমায়েত করেছিল।’

এই সময় অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকজন আয়োজক মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষের শরণাপন্ন হন। এর পরেই বিধায়ক ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। অভিযোগ, উল্টো বিক্ষোভকারীরাই তার ওপর চড়াও হয়।

এই ঘটনা সামনে আসতেই সংগঠনের এক পক্ষ বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন বারাসতের এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী। শেষে পুলিশি নিরাপত্তায় অনুষ্ঠান মঞ্চে নিয়ে আসা হয় সাংসদকে।

ওইদিন সন্ধ্যা ছটায় অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও, নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় একঘণ্টা পরে ব্যাপক পুলিশি উপস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান শুরু করতে পারেন আয়োজকরা। বিধায়ক রথীন ঘোষ বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংসদ এখানে আমন্ত্রিত হয়েছেন। মধ্যমগ্রাম পুরসভা প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া দিয়েছে। কিন্তু সংগঠনের কেউ কেউ বলছেন, তাকে ঢুকতে দেবেন না। এর সঙ্গে আমাদের দেশের এবং রাজ্যের সম্মান জড়িয়ে আছে।’

বিধায়ক রথীন ঘোষ আরও বলেন, ‘ওই সংগঠনের নিজেদের ঝামেলার কারণেই এই বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিলো কিছু মানুষ।’

মাস্টারদা সূর্যসেন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে তাপস চৌধুরী বলেন, ‘এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!