পলিট্রমা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রামের ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ৫ তরুণকে

মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন ৫ তরুণ এখন ভুগছে পলিট্রমাতে। নিউরো মেডিসিন বিভাগে তাদের চিকিৎসার পর তাদের চিকিৎসা নিতে হবে অর্থোপেডিক্স বিভাগেও। কারণ তাদের কারও কারও শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাঁড় ভেঙে গেছে।

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, পলিট্রমা (Polytrauma) এমন এক ব্যক্তির অবস্থা বর্ণনা করে যিনি একাধিক আঘাতজনিত পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। যেমন গুরুতর পোড়া ছাড়াও মাথায় গুরুতর আঘাত। ইরাকে অপারেশন ইরাকি ফ্রিডম এবং আফগানিস্তানে অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম থেকে ফিরে আসা গুরুতর আহত সৈন্যদের অবস্থা বর্ণনা করার জন্য মার্কিন সামরিক চিকিৎসকরা ‘পলিট্রমা’ শব্দটির ব্যবহার করার পর এটি সর্বক্ষেত্রে পরিচিত হয়ে ওঠে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্টার মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘আহতরা ৫ জনই পলিট্রমাতে আক্রান্ত। তাদের কমন হেড ইনজুরি হয়েছে। এছাড়া তাদের বোন ফ্রাকচার, বুক ও পেঠে ব্যথা লেগেছে। আহতদের আমরা সিটি স্ক্যান করেছি। তেমন খারাপ কিছু পাইনি। অল মোস্ট নরমাল। তবে এখান থেকে রিলিজের পর অর্থোপেডিক সার্জারী করতে হবে।’

তিনি বলেন, আহতদের দুজনের অবস্থা বেশি খারাপ। একজন শংকামুক্ত কিনা ১২ ঘণ্টা আগে বলা যাবে না।

জুনায়েদ হাসান ইমন এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। সকাল সাড়ে ৮টায় বাসা থেকে বাড়ি থেকে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝর্নার উদ্দেশ্য বের হয় ইমন। খৈয়াচড়া ঝর্ণা থেকে দুপুর দেড়টায় বড়তাকিয়া রেল স্টেশনে পৌঁছায় তাদের গাড়ি। গাড়ির পিছনের সিটে বসেছিল সে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি হওয়ার কারণে ট্রেনের শব্দ গাড়ির ভেতরে শুনেনি তারা। ক্রসিংয়ে সিগনাল না থাকায় গাড়িটি লাইনের উপর উঠে যায়। এসময় ট্রেনের এক ধাক্কায় গাড়িটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এর একটি অংশ এক কিলোমিটার দূরে ছিটকে পড়ে। অপর অংশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ ফিট দূরে গিয়ে পড়ে। সেখানেই ছিল ইমন। তার পাশেই ছিল আরো চারজন। তখন তাদের জ্ঞান ছিল না।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৪ ওয়ার্ডে চিকিসাধীন ইমনের বাবা আবুল কাশেম জানান, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। এদের মধ্যে ইমন সবার বড়। দুর্ঘটনার পর নয় ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছে না ইমন। বাবাকে ধরে কান্নাকাটি করে বলছে, বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে।

আহত মাহিনের বাবা মহিউদ্দিন জানান, তিনিও খবর পান ২টায়। খবর পেয়েই তিনি মেডিকেলে ছুটে আসেন। মাহিনের জ্ঞান নেই। মাঝে মাঝে জ্ঞান ফিরলেও চিৎকার করছে। সে পড়ত এইচএসসি প্রথম বর্ষে। মাহিন কমার্সে পড়ত। ইচ্ছে ছিল বিদেশ যাওয়ার। আয়াতের চোট লেগেছে মাথায়। সেন্স নেই। অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। আয়াতের বাবার নাম আব্দুস শুক্কর।

চিকিৎসাধীন হৃদয়, সৈকত ও পাভেল কথা বলতে পারছে। লোকজনকে চিনছে।

আইএমই/আরএম/এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!