পরীক্ষার হলে দুষ্টুমি, পিটিয়ে ছাত্রের চোখ ফাটালেন চট্টগ্রামের শিক্ষিকা

‘পরীক্ষার হলে পেছনের বেঞ্চ থেকে আমার বন্ধু আমাকে মারছিল। এ সময় স্কেল দিয়ে ক্লাসের টেবিলে বাড়ি দেওয়ায় শতাব্দী টিচার আমাকে হাতে, মাথায় ও চোখে মেরেছে। আমার চোখ থেকে রক্ত পড়েছে। প্রচণ্ড ব্যথা হয়েছে।’

চট্টগ্রাম মডেল পাবলিক স্কুলের শিক্ষিকা শতাব্দী বড়ুয়ার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের কথা জানায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) ১১টার দিকে কোতোয়ালীর ডিসি হিলের বিপরীতে চট্টগ্রাম মডেল পাবলিক স্কুলের শ্রেণীকক্ষে এমন ঘটনার সম্মুখীন হয় ওই শিশু শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে স্কুলে লিখিত অভিযোগ ও নগরীর কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সেই শিক্ষার্থীর বাবা প্রবাসী সুমন কান্তি দাশ।

এর আগে স্কুলে মারধরের ঘটনার পর নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসা নেয়।

এ বিষয়ে শিশুর বাবা সুমন কান্তি দাশ বলেন, ‘স্কুল থেকে আসার পর ছেলের চোখের ওপর রক্ত দেখে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার বলেন, আমার ছেলের চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। চোখের ভেতরের একটি গ্রন্থি ছিঁড়ে গেছে। চোখের ওপর প্রেশার পড়লে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত ব্যান্ডেজ করা থাকবে। তিনদিন চোখটি বন্ধ থাকবে।’

এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী রায় বরাবর মৌখিক অভিযোগ করেছেন শিশুর অভিভাবক। কিন্তু বিষয়টি প্রধান শিক্ষিকা আমলেই নেননি বলে জানান সুমন কান্তি দাশ। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ও শনিবার স্কুল বন্ধ থাকায় প্রধান শিক্ষিকা বরাবর মৌখিক অভিযোগ করেছি। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। এছাড়া লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে প্রধান শিক্ষিকাকে।’

শিশুকে মারধরের বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল (রোববার) অফিসিয়ালি কথা হবে বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী রায়। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা অন্য কাজে ব্যস্ত আছি।’ এরপর তিনি ফোন কল কেটে দেন।

এদিকে শিশুর পিতা প্রবাসী সুমন কান্তি দাশ নগরীর কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এনায়েতবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ সুকান্ত চৌধুরী বলেন, ‘স্কুলে শিশুকে মারধরের একটি অভিযোগ পেয়েছি। সোমবার সরেজমিন গিয়ে এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।’

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার চট্টগ্রাম মডেল পাবলিক স্কুলের ৩য় শ্রেণীর পরীক্ষা চলাকালীন সময় দুষ্টামি করায় শিশুটিকে মারধর করেন শিক্ষিকা শতাব্দী বড়ুয়া (৩৫)। এ সময় কাঠের স্কেলের আঘাতে শিশুটির বাম চোখ রক্তাক্ত হয়। পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরলে অভিভাবককে মারধরের বিষয়টি জানায়। এ সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকেও বিষয়টি জানানো হয়।

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!