যুবলীগের কাউন্সিলে চট্টগ্রামের দুই সহস্রাধিক নেতাকর্মী

পরশ যুবলীগের চেয়ারম্যান, মাইনুল সম্পাদক

অনেক আলোচনা সমালোচনা শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নতুন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ। একইসঙ্গে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসের (সম্মেলন) কাউন্সিল অধিবেশনে তাদের নির্বাচিত করা হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল ১১টায় এ কংগ্রেস উদ্বোধন করেন তিনি। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের শুরু হয়। পরে পায়রা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনাকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে এবং উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন যুবলীগ নেতারা। সম্মেলনের দ্বিতীয় সেশনে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে।

দলের কাউন্সিল অধিবেশনে চেয়ারম্যান পদে শেখ ফজলে শামস পরশের নাম প্রস্তাব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম। সমর্থন করেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক।

পরশ যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তিনি শিক্ষকতায় ব্যস্ত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর শেষে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে একই বিষয়ে আবারও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরশের বর্তমান বয়স ৫১ বছর।

এদিকে মাইনুল হোসেন খান নিখিল ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি এবার কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা নির্বাচিত হলেন। সাধারণ সম্পাদক পদে সাতজনের নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে সাধারণ সম্পাদকের নাম চূড়ান্ত করার জন্য ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। তবে সমঝোতা না হওয়ায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার মতামত অনুসারে নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।

ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী মাইনুল হোসেন খান নিখিল দুই যুগের বেশি সময় ধরে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে তিনি উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে অন্য যাদের নাম আসে তারা হলেন−মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন, সুব্রত পাল, মনজুর আলম শাহিন, ইকবাল মাহমুদ বাবলু ও বদিউল আলম।

এদিকে ক্যাসিনো, মাদক, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির অনেককে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারেও রয়েছেন। সংগঠনটির চেয়ারম্যানকেও এসব অনৈতিক কাজে সমর্থনের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সংগঠনে থাকলেও নিষ্ক্রিয় থাকতে বাধ্য হয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুর রহমান মারুফ, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও শেখ আতিয়ার রহমান দিপুসহ অনেকে।

এদিকে, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সম্মেলনে যোগ দিতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গেছেন প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী। এদের মধ্যে প্রায় এক হাজার জন গেছেন মহানগর থেকে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে তারা ট্রেন-বাসযোগে ঢাকায় পৌঁছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর থেকে ৫৫ জন কাউন্সিলর, ৫০০ জন ডেলিগেট এবং অর্ধ সহস্রাধিক কর্মী ঢাকায় গেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ জানান, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে সাতটি বাস এবং তূর্ণা নিশিতার দুইটি বগি ও ঢাকা মেইলের দুইটি বগি করে আহবায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদসহ নগর যুবলীগের প্রায় ৪০০ নেতাকর্মী ঢাকায় গেছেন। এছাড়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

সূত্র জানিয়েছে, সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা সোনার বাংলার একটি বগি এবং দুইটি বাসযোগে ঢাকায় গেছেন। আবদুল মান্নান ফেরদৌস, এডভোকেট চন্দন তালুকদার, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, দিদারুল আলমসহ প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় গেছেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা থেকে ২৫ জন কাউন্সিলর এবং ১০০ জন ডেলিগেট সহ তিন শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকায় গেছেন বলে জানান চট্টগ্রাম থেকে যোগদানকারী একজন নেতা।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!