পতেঙ্গা সৈকত ও মেরিন ড্রাইভে মানুষের সমাগম দেখে ম্যাজিস্ট্রেটও অবাক!

শুক্রবার ছুটির দিনের দুপুরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে তীব্র বেগে ছুটে এলো বিলাসবহুল এক মার্সিডিজ গাড়ি। করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৈকতে সমাগম এড়ানোর অংশ হিসেবে পুলিশ গিয়ে গাড়িটিকে থামালো। অপরাধ হল যেন সেটাই! কোন্ সাহসে গাড়ি থামালো এবং গাড়ির সবাইকে কেন ‘স্যার’ ডাকলো না — পুলিশের কাছে তারা উল্টো কৈফিয়ত চান সেই গাড়ির যাত্রীরা। গাড়ির সবাই নিজেদের ‘ক্ষমতাধর’ উল্লেখ করে কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। শেষে রাগে গজগজ করতে করতে তারা জোরে গাড়ি চালিয়ে একপর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে আসলে পুলিশ বিষয়টি তাকে জানায়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার দায়ে সেই মার্সিডিজ গাড়ির মালিকের পরিচয় বের করে তার প্রতি আইনানুগ নেওয়ার জন্য স্থানীয় থানাকে নির্দেশ দেন।

পতেঙ্গা সৈকত ও মেরিন ড্রাইভে মানুষের সমাগম দেখে ম্যাজিস্ট্রেটও অবাক! 1

করোনাভাইরাসের থাবায় যখন কাঁপছে চট্টগ্রাম, তখন ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে নগরীর পতেঙ্গা মেরিন ড্রাইভে নামলো মানুষের ঢল। শত শত গাড়ি। হাজার হাজার মানুষের সমাগম রীতিমতো। খবর পেয়ে বিকেলে যখন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে সেখানে পৌঁছালেন, তিনি নিজেও দেখে অবাক। এর মধ্যেই আবার তরুণরা মেতেছে মোটরসাইকেলের নানা কসরতে। সামাজিক দূরত্ব মানা তো দূরের কথা, স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও খারাপ অবস্থা সেখানে।

শুক্রবার (১২ জুন) দুপুর থেকেই পতেঙ্গা মেরিন ড্রাইভ এলাকায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে গাড়ির সংখ্যা। জমতে থাকে মানুষের সমাগম। বিকেলেই সৈকত পাড়ে একের পর এক বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে হাজির তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধসহ অসংখ্য মানুষ। এমন দৃশ্য দেখে কারোর মনেই হবে না, এই চট্টগ্রামে প্রতিদিনই লোক মারা যাচ্ছে করোনায়। প্রতিদিনই শত শত লোক প্রাণঘাতি ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে।

পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, কিশোরেরা দল বেঁধে সৈকতের তীরে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলায় মেতে উঠেছে। আবার তরুণদের অনেকে মেতে উঠেছেন মোটরসাইকেলের নানা কসরতে। সেই কসরত আবার ভিড় জমিয়ে দেখছেন অনেকে।

বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম মেরিন ড্রাইভ ও সৈকত এলাকায় গিয়ে এমন কাণ্ড দেখে নিজেও অবাক! পরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে লোকজন সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে মোটরসাইকেলের কসরতে মেতে ওঠা অনেকে অভিযানের খবর পেয়ে আগেভাগেই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট সৈকতে আসা এসব গাড়ির লাইসেন্স জব্দ ও বাতিলের সুপারিশ করেছেন। এসব মোটরসাইকেল ও গাড়ির লাইসেন্স বাতিল ও জব্দের জন্য বিআরটিএকে জানানো হবে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!