পতেঙ্গার ৫ পয়েন্টে শহরে ঢুকছে শত শত লোক (ভিডিওসহ)

করোনার দুৃর্যোগময় পরিস্থিতিতে সরকারি আদেশ না মেনে কর্ণফুলীর নদীপথে পতেঙ্গার পাঁচটি পয়েন্টে প্রতিদিন শহরে ঢুকছে শত শত লোক। ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে এসব যাত্রী পারাপার। প্রতি বোটে ১৫-২০ জন যাত্রী গাদাগাদি করে পারাপার করা হচ্ছে। জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। এ ধরনের বেআইনি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ঘাট ইজারাদার মো. শাহজাহানসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, শহরের প্রবেশমুখে সিএমপির চেকপোস্ট থাকলেও পতেঙ্গাজুড়ে নেই পুলিশের কোনও চেকপোস্ট। অথচ সেখানকার ৫টি চিহ্নিত ঘাট দিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শহরে ঢুকছে লোকজন। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) নিষেধাজ্ঞা ভেঙে নদীপথে বোটের সাহায্য লোকজন পারাপারের একটি ভিডিওচিত্র চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হাতে আসে।

সূত্র বলছে, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪টি ঘাট রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১১, ১২, ১৪ ও ১৫ নম্বর ঘাট। এছাড়া ১৭ নম্বর আরেকটি ঘাট রয়েছে, যেটি অবৈধ। এই ৫টি ঘাট দিয়ে প্রতিদিন শত শত লোক পারাপার করছে ঘাট ইজারাদার। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এইসব ঘাট দিয়ে নামানো হচ্ছে জাহাজের তেল, চালসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর, বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন একসঙ্গে সমন্ব্য় করে কাজ করছে। পতেঙ্গার ১৫ ও ১২ নম্বর ঘাট দিয়ে শিপিং ও বন্দরের কর্মচারী চলাচলের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের নিজস্ব পরিচয়পত্র দেখিয়ে আসা-যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘোষিত নির্দেশনায় রয়েছে, এসব ঘাটের দায়িত্বরত কর্মচারী ও বোটচালকরা লোকজনের তথ্য সংরক্ষণ করবে। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ডেনিশবোটে সর্বোচ্চ ৫-৬ জন ও স্পিডবোটে ৩-৪ জন লোক যাতায়াত করবে এবং জাহাজের কর্মচারী পারাপারেরও একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া আছে নির্দেশনায়। কিন্তু এসব শর্ত কিংবা নিয়ম মানাই হচ্ছে না।

তবে ওই এলাকার কিছু ব্যবসায়ী ও সিটি কর্পোরেশনের ঘাট ইজারাদার মো. শাহজাহানই মূলত নিয়মলঙ্ঘনের পেছনে মূল ভূমিকা রাখছেন— এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। অর্থের বিনিময়ে তারাই এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় লোকজন আসা-যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন থেকে সেখানে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে শতাধিক লোকজনকে মামলাসহ আর্থিক জরিমানা করার ঘটনাও ঘটেছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ঘাট ইজাদার মো. শাহজাহানের বক্তব্যে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখনই খবর নিচ্ছি। এই সময়ে কাউকে কোন ধরনের অন্যায় করার সুযোগ দেওয়া হবে না।’

একই কথা জানালেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া। বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!