পতেঙ্গায় ব্যবসায়ীকে ছুরি মেরে খুন করল ‘গাভী’ ইলিয়াস বাহিনী

চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গার ভিআইপি সড়কের ছুরি মেরে মো. রফিক নামের এক তেলের দোকানিকে খুন করা হয়েছে।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভিআইপি সড়কের টি কে গ্রুপের মাঠে এই ঘটনা ঘটে।

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই এলাকার ইলিয়াস প্রকাশ গাভী ইলিয়াসের নির্দেশে তার ভাই রুস্তম ও আলাউদ্দিন, ভাইয়ের ছেলে তুষার এবং ইলিয়াসের ব্যবসায়িক অংশীদার মো. ফারুকসহ অন্তত ১৫ জনের একটি দল রফিককে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন নিহত রফিকের বড় ভাই শাহিনুর।

শাহিনুর বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যার পরে রফিক বিজয়নগর থেকে চা খেয়ে বাড়ির দিকে আসছিল। ভিআইপি রোডের টি কে গ্রুপের মাঠের কাছাকাছি আসলে, তাকে ঘিরে ধরে মাঠের ভেতরে নিয়ে যায় ইলিয়াসের লোকজন। সেখানে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করা হয়। খবর পেয়ে সেখান থেকে অাহত অবস্থায় উদ্ধার করে মেডিকেল নেওয়া হলে পথে তার মৃত্যু হয়।’

নিহত মো. রফিক (৩০) পতেঙ্গা থানার দক্ষিণ পাড়ার নাগর আলী নতুন বাড়ির মৃত বদিউল আলমের ছেলে। তার নেভাল রোডে চায়নিজঘাট এলাকায় তেলের দোকান আছে। এছাড়া তার পরিবারে স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খুনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে ইলিয়াসসহ তার লোকজনকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করেছি। এটি মার্ডার মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

জানা গেছে, মো. ইলিয়াস চট্টগ্রামের পতেঙ্গার দক্ষিণ পাড়া কোনার দোকান এলাকার নাগর আলীর নতুন বাড়ির মৃত হোসেন আহম্মদের ছেলে। পতেঙ্গা থানা সৈনিক লীগের থানা সভাপতি হিসেবে নিজের পরিচয় দেন।

তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি, নির্যাতন ও মাদকের মামলাসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে লাইটার জাহাজ থেকে তেল চুরির অভিযোগ। তার এসব অপকর্মের নানা অভিযোগ রয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি), র‌্যাব-৭ ও কোস্টগার্ড দপ্তরে।

১৯৯১ সালে পতেঙ্গা থানার কোনার দোকান এলাকায় এক ব্যবসায়ীর দোকান ডাকাতির সময়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন ইলিয়াস। ওই মামলায় দীর্ঘ ৭ বছর ধরে জেল খাটেন তিনি। এরপর ১৯৯৮ সালে কোনার দোকান এলাকায় আবারও কুপিয়ে হত্যা করেন ইপিজেড বন্দরটিলা এলাকার এক ব্যবসায়ীকে। ওই মামলায় তার দুই বছর জেল হয়।

২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর সাগরে বোট ডাকাতির করার সময়ে কোস্টগার্ডের হাতে ধরা পড়েন ইলিয়াস ও তার জলদস্যু বাহিনীর লোকজন। ওই সময় কোস্টগার্ড মামলা দায়ের করে। পরে পতেঙ্গা থানায় সেটি হস্তান্তর করা হয়। সর্বশেষ ৪ বছর আগে মেঘনা গ্রুপের সাগরে থাকা জাহাজ থেকে পণ্য চুরির দায়ে ইলিয়াসসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে প্রতিষ্ঠানটি।

এএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!