পটিয়া থেকে চকরিয়া, ৬৬ কিলোমিটার সড়কে ৪৯ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ৪৯টি বাঁক থাকায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে দূরপাল্লার বাসগুলো। এছাড়াও এ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক হাট-বাজার থাকায় প্রতিনিয়ত বাসসহ চলাচলরত যানবাহনগুলো যানজটের কবলে পড়ায় যাত্রীদেরকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে পটিয়া-দোহাজারী, সাতকানিয়া, কেরানীহাট ও আমিরাবাদ চকরিয়া পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগে (সর্বোচ্চ) চার থেকে পাঁচ ঘন্টা।

জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে কমপক্ষে ৪৯টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। সড়কের দুই পাশে রয়েছে অনেকগুলো হাট-বাজার। এ হাটবাজারে যানজটের কারণে বিভিন্ন সময়ে এ মহাসড়কের পটিয়ার শান্তিরহাট, কলেজবাজার, বাদামতল, মনসা চৌমুহনী, ভেল্লাপাড়া, মুন্সেফবাজার, থানার মোড়, ডাকবাংলো, বাস স্ট্যান্ড, পোস্ট অফিস মোড়, ভাইয়ার দিঘীর পাড়, চন্দনাইশের রৌশনহাট, বাগিচাহাট, দোহাজারীবাজার, সাতকানিয়ার কেরানীহাট ও লোহাগাড়ার, আমিরাবাদ, তেয়ারীহাট ও বটতলীতে প্রায়ই যানজট চরম আকার ধারণ করে এবং দুর্ঘটনায় শত শত লোক গুরুতর আহতসহ অধিকাংশ লোক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটির পটিয়া মইজ্জার টেক, পটিয়া-আনোয়ারা ক্রসিং, মনসার টেক, বাদামতল টেক, নিমতল মাজার মোড়, পাইরোল, গৈড়লার টেক, আমজুরহাট, পটিয়া পোস্ট অফিস, আদালত গেট মোড়, থানার মোড়, ডাকবাংলোর মোড়, বাস স্টেশন, কমলমুন্সির হাট মিলে ২০টি পয়েন্টে এবং চন্দনাইশ থেকে লোহাগাড়ার চুনতি পর্যন্ত ২০টির অধিক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর শাহ্ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাশ থেকে লোহাগাড়া উপজেলা সদর পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটার দূরত্বের ২০টি পয়েন্টে সড়কের দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে গাড়ির স্ট্যান্ড, গ্যারেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর ৯টি পয়েন্টে বসে নিয়মিত হাটবাজার। এ অংশের সড়কে ৪৯টি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও ৩০টি স্থানে অপরিকল্পিত স্পিডব্রেকার রয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়ায় যাত্রী সাধারণকে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়।

পটিয়ার শান্তিরহাট হচ্ছে যানজটে অশান্ত একটি এলাকা। এখানে প্রতিদিন এমন কোনো গাড়ি নেই, ২৫ থেকে ৩০ মিনিট যানজটের কবলে পড়তে হয়। প্রশাসন মহাসড়ক থেকে বাজার উচ্ছেদ করলেও এখন সেখানে সিএনজিচালিত অটোরিক্সার স্টেশনসহ ভ্রাম্যমাণ বিভিন্ন বিক্রেতা তাদের পণ্য বিক্রি করায় যানজট চরম আকার ধারণ করেছে। এর থেকে উত্তোরণ করতে হলে এখানে ওভারব্রিজ করা একান্ত জরুরি।

গাড়ির চালক ওসমান গণি জানান, মহাসড়কের দু’পাশে অনেক হাট-বাজার ও অসংখ্য দোকানপাট, গাড়ির স্ট্যান্ড ও গ্যারেজ গড়ে উঠেছে। এছাড়াও সড়কে এত বেশি আঁকা-বাঁকা বাঁকে প্রতিনিয়ত অত্যন্ত ঝুঁকির নিয়েই আমাদের গাড়ি চালাতে হয়। ফলে আমরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থানে পৌঁছাতে পারি না। বিশেষ করে পটিয়ার পাইরোল, গৈড়লা, ভাইয়ার দিঘীর পাড় এবং বাদামতল, এলাকা খুবই ঝূঁকিপূর্ণ। এখানে প্রতিদিনই ঘটে দুর্ঘটনা।

পটিয়া বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতা মো. ইয়াছিন বলেন, ‌‌‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এতোবেশি বাঁক রয়েছে- যার কারণে চালকদের অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়। দুইপাশে দোকানপাট গড়ে উঠার কারণে যানজট ও দুর্ঘটনা লেগেই আছে।’

দোহাজারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া চট্রগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে। এর আওতায় শীঘ্রই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ভেল্লা পাড়া থেকে চার লেনের কাজ শুরু হলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো ঠিক করা হবে। তখন দুর্ঘটনাও কমে আসবে।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!