পটিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, কয়েক লাখ মানুষ দুর্ভোগে

খালের ভাঙনে বিলীন গ্রামীণ সড়ক

টানা সাত দিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়ক শ্রীমাই খালে বিলীন হয়ে গেছে। পুরো এলাকাটিই বর্তমানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে এলাকার লোকজন দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন।

পাহাড়ি ঢলের পানি শ্রীমাই খালের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পানির ঢলে হাইদগাঁও, কচুয়াই, ভাটিখাইন, ছনহরা, আশিয়া এলাকার ফসলি জমির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

শনিবার (১৩ জুলাই) ভোরে হাইদগাঁও ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের অন্নদা দত্ত সড়কের বেশ কিছু অংশ খালে বিলীন হয়ে গেছে। শ্রীমাই খালের আশপাশে যেসব ফসলি জমি রয়েছে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বালুতে ভরাট হয়ে গেছে ফসলসহ জমি। খালের ভাঙন জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে আশপাশের এলাকায় আরো ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।

পাহাড়ি ঢলের পানি শ্রীমাই খালের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
পাহাড়ি ঢলের পানি শ্রীমাই খালের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন ও একটি পৌরএলাকায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে রয়েছে। এ কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে। এদিকে উপজেলার ছনহরা, কচুয়াই ও ভাটিখাইন এলাকায় শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে অসংখ্য মানুষের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন আশপাশের মানুষের বসতঘরে গিয়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

ইতিমধ্যে পটিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে চাল, শুকনা খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের অনুদান দিয়েছেন।

৭ জুলাই শুরু হওয়া টানা সাতদিনের বৃষ্টিতে উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে বেশ কিছু রাস্তা এখনো ডুবে রয়েছে। উপজেলার পাচুরিয়া এলাকায় সড়ক জনপথ বিভাগের উদ্যোগে খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের ধীরগতির কারণে ও খালের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করে রাখার কারণে ওই এলাকায় বৃষ্টির পানি আটকে রয়েছে। ফলে মনসা, হুলাইন, পাইরোল, বড়লিয়া, কুসুমপুরা, মেহেরআর্টি, হাবিলাসদ্বীপ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক জসিম জানিয়েছেন, প্রবল বর্ষণে তাদের এলাকার আজিমপুর গ্রামীণ একটি সড়কসহ কয়েকটি সড়কের বেহাল অবস্থা হয়েছে। শ্রীমাই খালের পাড় ভাঙনের কারণে তাদের এলাকাসহ কিছু বসতঘর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গ্রামবাসীর উদ্যোগে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাঙন রোধে সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে যে কোন মুহূর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে আরো বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!