পটিয়ায় পানি কমলেও অধিকাংশ মানুষের মানবেতর জীবন যাপন

ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে পটিয়ায় সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) রাত থেকে লোকালয়ে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো বেশ কিছু গ্রামীণ সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। পটিয়ায় কয়েকটি এলাকায় পানি থেকে যাওয়ায় এখনও মানবেতর জীবন-যাপন করছে অধিকাংশ মানুষ। রাস্তা দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার প্রত্যেকটি গ্রামীণ সড়ক ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে।

এদিকে উপজেলার আশিয়া, ভাটিখাইন ছনহরা, কাশিয়াইশ, জিরি, কুসুমপুরা, বেলখাইন, কেলিশহর, হাইদগাঁও, বড়লিয়া, জঙ্গলখাইন, কোলাগাঁও, পাঁচুরিয়া, হাবিলাসদ্বীপ, নাইখাইনসহ আরো অনেক ছোট-বড় গ্রামীণ সড়ক (৪ ফুট) পানির নিচে ডুবে আছে।
গত ১১ ও ১২ জুলাই শঙ্খনদীর পানি ও পাহাড়ি ঢল লোকালয়ে প্রবেশ করলে উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। ১২ জুলাই রাতে বন্যার পানি কিছুটা কমে আসলেও ১৩ জুলাই দুপুর থেকে পুনরায় বাড়তে থাকে বন্যার পানি। যা বর্তমানে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বন্যায় রূপ নেয়। অনেকেই নিজস্ব বসতঘর ছেড়ে নৌকায় করে আত্মীয়-স্বজন কিংবা আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে যেতে দেখা গেছে। এ ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক। সড়কের উপর থেকে পানি নেমে গেলেও রেখে গেছে মারাত্মক ক্ষতচিহ্ন। এছাড়া সড়কের অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত হওয়ায় রিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহন এখনো চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে জনজীবন এখনো স্বাভাবিক হয়নি। মানুষকে নিত্য কাজকর্ম সারতে হচ্ছে পায়ে হেঁটেই।
পটিয়ায় পানি কমলেও অধিকাংশ মানুষের মানবেতর জীবন যাপন 1

গ্রামের হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাজারে কাঁচা তরকারির সরবরাহ এলাকার চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে বেশি দাম দিয়ে তরকারি কিনতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এতে করে নিন্মবিত্তের লোকজন হিমশিম খাচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা যায়, উপজেলার আশিয়া, ভাটিখাইন, শোভনদণ্ডী, কচুয়াই, হাইদগাঁও, বড়লিয়া ও কাশিয়াইশ ইউনিয়নের ছোট-বড় সড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি এখনো প্রবাহিত হচ্ছে। সন্ধ্যা ৮ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এসব গ্রামীণ সড়ক দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হলেও কিছুটা স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়।

আশিয়া এলাকার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান জানান, প্রতিবছর বর্ষায় পটিয়ার ছোট-বড় সড়ক দিয়ে প্রবল বেগে বন্যার পানি চলাচল করে। এতে প্রতিবছরই যানবাহন চলাচলে ব্যাহত হয়। বছরের পর বছর এ ধারাবাহিকতা চলে আসলেও কর্তৃপক্ষ বন্যার পানি নিষ্কাষণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কালভার্ট নির্মাণ করছে না। ফলে প্রতিবছরই দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

এদিকে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সাংসদ হুইপ আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরী উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!