পটিয়ায় মাকে খুনের ঘটনায় মেয়রপুত্রের বিচার শুরু

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা প্রয়াত সামশুল আলম মাস্টারের স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে (৫০) গুলি করে হত্যার ঘটনায় ছেলে মাঈনুদ্দীন মো. মাইনুর (২৯) বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অভিযোগ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৩১ মে) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজিজ আহমেদ ভূঞা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পিপি অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। তিনি বলেন, আজ (বুধবার) ধার্য তারিখে গর্ভধারিণী মাকে গুলি করে হত্যার দায়ে অস্ত্র আইনে সাবেক মেয়র পুত্র মাঈনুদ্দীন মো. মাইনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) ও ১৯(এফ) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। আগামি ২১ জুন সাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে গত বছরের ১৬ আগস্ট বেলা সোয়া দুইটার দিকে পটিয়া পৌরসভার সবজারপাড়ায় নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে মাঈনুল গুলি করে জেসমিন আক্তারকে হত্যা করে।

সেদিন দুপুরে সামশুল আলমের স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও মেয়ে শায়লা শারমিন ব্যাংক থেকে সামশুলের রেখে যাওয়া টাকা তুলতে গেলে মাঈনুদ্দীন ক্ষুব্ধ হন। এ সময় মাঈনুদ্দীন প্রথমে বোন শায়লাকে গুলি করেন এবং পরে মা জেসমিনকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। প্রথম গুলিটি ফসকে গেলেও দ্বিতীয় গুলিটি জেসমিনের চোখের নিচে লাগে। পরে মাঈনুদ্দীন সেখান থেকে সটকে পড়েন।

গুলির শব্দ পেয়ে স্থানীয় লোকজন জেসমিন আক্তারকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তাঁকে প্রথমে পটিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় সেদিন রাতেই অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী শায়লা শারমিন নিপা বাদী হয়ে ভাই মাঈনুদ্দীনকে আসামি করে পটিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ১০ রাউন্ড কার্তুজ, অবৈধ ১টি পিস্তল, ১টি ব্যবহৃত খোসা, ১টি অব্যবহৃত পিস্তলের গুলি উদ্ধার করে। পরে মাঈনুলের পিতার অফিস তল্লাশি করে থানা পুলিশ একটি পিস্তল উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় হত্যা মামলা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। পরে ১৮ আগস্ট সাতকানিয়ার কেরানীরহাট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে শাহ আমানত ব্রীজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। একই দিন সাতকানিয়া থানার রসুলপুর এলাকার একটি গুদামঘর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।

এর আগে একই বছরের ১৩ জুলাই জাপা নেতা ও সাবেক মেয়র সামশুল আলম মাস্টার মারা যান।

আরএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!