নোংরা পরিবেশেই সাতকানিয়ার মুড়ি কারখানা, মাসোহারা যায় নেতাদের পকেটে

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এওচিয়ার দেওদীঘিতে খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান (বিএসটিআই) কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই গড়ে ওঠেছে মোস্তাফা মুড়ি কারখানা। শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে শুরু করেছে কারখানাটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

সরেজমিনে সোমবার (১১ মে) বিকালে গিয়ে দেখা যায়, কারখানাটির সামনে গেটে তালা মেরে ভেতরে মুড়ি উৎপাদনের কাজ করছে বেশ কয়েকজন শ্রমিক। তারা মুড়িগুলো অপরিচ্ছন্ন মেঝেতে রেখে প্যাকেটজাত করছে। তবে যারা মুড়ি প্যাকেটজাত করছে তাদের গায়ে কোনো কাপড় নেই। ফলে গরমে শ্রমিকদের ঘাম মিশছে মুড়িতে।

মুড়ির একটি প্যাকেট হাতে নিতেই চোখে পড়লো প্যাকেটে নেই কোনো মূল্য তালিকা, উৎপাদন ও মোয়াদোর্ত্তীণের তারিখ। এছাড়া প্যাকেটের গায়ে লেখা হয়নি ব্যাচ নম্বরও।

কথা হয় মুড়ি কিনতে আসা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এক পাইকারী ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, যখন যে রকম ইচ্ছা সেরকম কারখানার মালিক দাম নির্ধারণ করেন। এসব মুড়িতে দেওয়া হয় না মেয়াদও। তাছাড়া এই কারখানাটি স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

ওমর আলী নামের স্থানীয় একব্যক্তি বলেন, ওই কারখানা থেকে পাইকারি মুড়ি কিনে এনে মোলভীর দোকানে বিক্রি করা হয়। আমি তার দোকান থেকে কয়েকবার মুড়ি কিনেছি। এই মুড়ি যতবার খেয়েছি ততবার পেট খারাপ হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারখানার মালীক প্রভাবশালী হওয়ায় অনুমোদনহীন এ কারখানাটি বন্ধ করার সাহস পায় না। অথচ ওই কারখানার সামনে প্রতিদিন পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সাংসদ যাতায়াত করে থাকনে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডও ওই কারখানার সামনে দিয়ে প্রায়সময় যাতায়াত করে থাকেন। তারা দেখেও একবছর ধরে কারখানাটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারদলীয় নেতাদের মাসোহারা দিয়েই এই অবৈধ মুড়ি কারখানা গড়ে তোলেছেন মো. নাসির উদ্দিন।

এ বিষয়ে কারখানার মালিক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমি শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছি এবং লাইসেন্সের জন্য বিএসটিআইয়ে টাকা জমা করেছি।

কখন জমা করেছেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সাথে আমার কোন কাজ নেই। আপনার কোনো অভিযোগ থাকলে উপরের মহল বা প্রশাসনকে বলেন। আমার মিলে এসবের তেমন দরকার পড়ে না।

উপজেলা স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর মো. কামাল উদ্দীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টি আমরা সিরিয়াসলি নিলাম। দ্রুত অ্যাকশানে যবো।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!