আইন থাকলেও বোরকায় নিষেধাজ্ঞা যেখানে কেউ মানে না

নেদারল্যান্ডসে বোরকার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেটি কার্যকারিতা হারিয়েছে। পুলিশ ও ডাচ পরিবহন সংস্থা কেউই এ আইন প্রয়োগে আগ্রহী নয়। এর ফলে নেদারল্যান্ডসের কথিত বোরকা নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে গেছে।

প্রসংগত, ২০১৬ সালের ২৬ জুন বোরকার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি আইন দেশটির পার্লামেন্টে পাশ করা করা হয়।

নেদারল্যান্ডসের ‘ফেস কাভারিং ক্লথস অ্যাক্ট’ অনুসারে, আংশিক নিষেধাজ্ঞায় স্কুল-হাসপাতালসহ সরকারি ভবনে এবং গণপরিবহনে মুখের নেকাব, পূর্ণ মুখের হেলমেট, এবং বোরকা পরা নিষিদ্ধ।

এ আইন অনুসারে নিষিদ্ধ পোশাক পরিধানকারীদের আপত্তিজনক অংশ সরাতে নির্দেশ দিতে পারবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও পরিবহন সংস্থাগুলো। এটি অমান্য করলে পুলিশ জরিমানা করতে পারে। মোট কথা ওই দেশে এ জাতীয় পোশাক পরা নিষিদ্ধ। তবে ওই দেশের পুলিশ এ আইন প্রয়োগে আগ্রহী নয়। আইনে এটি প্রয়োগের বাধ্যবাধকতাও কম বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

ওই দেশের পরিবহন সংস্থাগুলো বলছে, তারা ট্রেন, মেট্রো, ট্রাম বা বাসে তাদের কর্মীদের এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা রাখতে বলবে না, যদি সেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা না থাকেন।

দেশটির পরিবহন নেটওয়ার্কের মুখপাত্র পেড্রো পিটারস বলেছেন, আইনটি অকার্যকর ছিল। পুলিশ আমাদের জানিয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না।

২০১৬ সালে মার্ক রুটের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০১৬ সালে আইনটি পাশ করেছিলেন। মূলত ইসলামবিরোধী ফ্রিডম পার্টির নেতা গের্ট ওয়াইল্ডার্সের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রতিক্রিয়া হিসাবেই এই কাজটি করা হয়েছিল।

অন্যদিকে এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, নারীরা কী পোশাক পরবে সে বিষয়ে তাদের অধিকারের ওপর নাক গলানো মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তবে মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপীয় আদালত ২০১৪ সালে রায় দিয়েছে যে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞাগুলো মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপীয় সম্মেলনের লঙ্ঘন নয়।

উল্লেখ্য, নেদারল্যান্ডসে বোরকা বা নিকাব পরা মহিলাদের সঠিক সংখ্যা অজানা। ২০০৯ সালে আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যানিলিজ মুরসের একটি গবেষণায় অনুমান করা হয়, অন্তত ১০০ জন মহিলা নিয়মিত মুখের পর্দা পরেন। এই সংখ্যা মাঝে মাঝে ৪০০ও ছাড়িয়ে যায়।

অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ছাড়াও ইউরোপিয়ান দেশগুলো পাবলিক প্লেসে বোরকা পরিধানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইন করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর পর সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাও এমন আইন করেছে।

গার্ডিয়ান থেকে অনূদিত

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!