নুরুল আজিম রনির লাশ ফেলতে চান ডা. ফয়সাল ইকবাল

‘রইন্যার (নুরুল আজিম রনি) মতো চোর-ডাকাতের সাথে কী? দেশ একটু সুস্থ হোক। ওর লাশ দেখা যাবে। ওর লাশ যদি না ফেলি আমার নাম ফয়সাল ইকবাল না।’

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীর কণ্ঠে এভাবেই শোনা গেল চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিকে হত্যার ‘আগ্রহের’ কথা৷

চট্টগ্রামের হালিশহর ওয়াপদা মোড় এলাকায় ‘প্রিন্স অব চিটাগাং’ কমিউনিটি সেন্টারে স্থাপিত করোনা আইসোলেশন সেন্টারের অন্যতম উদ্যোক্তা সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে ডা. ফয়সাল ইকবালের মুঠোফোনে আলাপের রেকর্ডে উঠে আসে বিষয়টি।

১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের এ কথোপকথনের রেকর্ডে ডা. ফয়সল ইকবালকে বলতে শোনা যায়, ‘ডাক্তার, নাই কিছু নাই। ওখানে ভংচং করার দরকারটা কী?’

এ সময় সাজ্জাদ হোসেন বলে, ‘ডাক্তার নাই আপনাকে কে বললো? আচ্ছা ঠিক আছে।’

ডা. ফয়সল বলেন, ‘রোগীর যেটার অভাব, আইসিইউ, ন্যাজাল ক্যানোলা, ওখানে কী আছে? সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন আছে? নাকি আর কী আছে? মানুষ শোয়াই রাখার জন্য… মানুষ শোয়াই রাখার জন্য কি একটা দরকার। মেয়রেরটাই যথেষ্ট। ওখানে ডাক্তারও আছে। আর ওখানে দুনিয়ার চোর-ডাকাইত সবগুলারে নিসো, ওখানে আমরা যাবো, না?’

সাজ্জাদ এ সময় বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে’।

ডা. ফয়সাল বলেন, ‘রইন্যার মত চোর-ডাকাইতরে নিয়ে তুমি ইয়া করো। ওখানে আবার তোমরা পিকনিক পার্টি দাও। মানুষের টাকা চাঁদা তুলে।”

সাজ্জাদ প্রশ্ন করেন, ‘পিকনিক পার্টি করি মানে?’

ফয়সাল ইকবাল এ প্রশ্ন এড়িয়ে বলেন, ‘ভাল ভাল মানুষ বের হয়ে যাচ্ছে কেন ওখান থেকে।’

এসময় কে বের হয়েছে জানতে সাজ্জাত।

ফয়সাল তখন বলেন, ‘মেয়ে একটা বের হয়ে গেছে।’

তখন সাজ্জাদ বলেন, ‘মেয়েটাতো পাগল’।

ফয়সাল বলেন, ‘ওরা কোন পাগল না। ওরা প্রথম থেকে বের হয়েছে। যাই হোক, এসব বলে লাভ নেই।

একটু থেকে ফয়সাল ইকবাল বলে উঠেন, ‘চোর-ডাকাইতের সাথে থেকে লাভ নেই। রইন্যার (নুরুল আজিম রনি) মতো চোর-ডাকাইতের সাথে কী? দেশ একটু সুস্থ হোক। ওর লাশ দেখা যাবে। ওর লাশ যদি না ফেলি আমার নাম ফয়সাল ইকবাল না।’

এ বিষয়ে ডা. ফয়সাল ইকবাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কেউ জাতে ওঠার জন্য আমার লেভেলে নিজেকে আনতে চায়। ওকে আমি নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করিনি। এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। কেউ যদি বাজারে থাকার জন্য, নিজেকে হাইলাইট করার জন্য এসব বানায় তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আমার এসবের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

এ বিষয়ে হালিশহর করোনা আইসোলেশন সেন্টারের অন্যতম উদ্যোক্তা সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি এই আইসোলেশন সেন্টার ভিজিট করতে বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল ভাইকে কল করেছি। ওনার সঙ্গে আমার ভাল সম্পর্ক। চট্টগ্রামের কোনো গ্রুপিং রাজনীতির সঙ্গেও আমি নেই। কিন্তু আমি ফয়সাল ভাইকে কল করার পরই উনি আমাকে ডা. মিনহাজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে উঠলেন। আবার কিছু সময় পর রনিকে নিয়ে বলা শুরু করলেন। একপর্যায়ে বললেন, রনির লাশ দেখা যাবে। তার লাশ ফেলতে না পারলে ওনার নাম ফয়সাল ইকবাল না।’

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনা দূর্যোগে সরকারী সিদ্ধান্তকে বারবার অমান্য করে চট্টগ্রামের চিকিৎসা সেবাকে পুরোপুরি অকার্যকর করেছিল ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী ও ডা. লিয়াকত আলী খান। এ কারণে চট্টগ্রামে চিকিৎসার অভাবে পথে পথে মানুষ মারা যেতে দেখেছে সবাই। আমি ধারবাহিক সমাবেশ ও মানববন্ধনের মাধ্যমে এসবের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলাম। তাদের গ্রেফতার করে চট্টগ্রামের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের দাবিও করেছিলাম। এ কারণে তারা আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে করছে।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!