নিষিদ্ধ খসকি জালের দাপটে সাগরে দখল হারাচ্ছে জেলেরা

সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সন্দ্বীপের পশ্চিমে মেঘনার মোহনায় চলেছে অবৈধ জালে মাছ শিকার। ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবৈধ খসকি জাল দিয়ে নিয়মিত মাছ শিকার করছে কিছু চিহ্নিত জেলে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে ধরা পড়ছে জাটকাসহ মাছের পোনাও।

স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, এসব জালের খুঁটিতে প্যাচিয়ে এ পর্যন্ত তাদের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ইলিশের জাল নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি যেখানে খসকি জাল বসানো হয়েছে, সেখানে মাছ ধরতে গেলে জেলেদের মারধরও করা হচ্ছে। এসব কাণ্ডে জেলেরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সন্দ্বীপের রহমান মাঝি ও আলাউদ্দিনসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সহযোগিতায় সাগরে বসানো হয়েছে এই অবৈধ খসকি জাল। সন্দ্বীপের অধিকাংশ জেলে মনে করছেন মৎস্য কর্মকর্তা ও কোস্টগার্ডের উদাসীনতায় টিকে আছে এসব অবৈধ জাল।

অভিযোগের বিষয়ে রহমান মাঝি বলেন, ‘আমার খসকি জাল আছে, কিন্তু সেটা সন্দ্বীপের সীমানাতে না। যেসব জাল নিয়ে জেলেদের অভিযোগ সেটা সন্দ্বীপের সারিকাইতের সেলিম মেম্বারের।’ তবে এ ব্যাপারে সেলিম মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি।

মারধরের শিকার বাংলাবাজার ঘাটের শামসু বলেন, ‘আমাদের নৌকা খসকি জালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন মিলে নৌকায় উঠে আমাকে মারধর করে।’

এই বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো।’

গাছতলী ঘাটের জেলে মানিক দাশ বলেন, ‘খসকির কারণে আমাদের প্রায় ১৫০টি জাল নষ্ট হয়ে গেছে। এসব জালের জন্য আমি মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছি। ইলিশের মৌসুমে যদি মাছ ধরতে না পারি তাহলে আমাকে পথে বসতে হবে।’

এদিকে এসব খসকি জাল উচ্ছেদ করা না হলে ইলিশের এই মৌসুমে জেলেদের দুই থেকে তিন কোটি টাকা জাল ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন ক্ষতি থেকে বাঁচতে অবৈধ খসকি উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান সন্দ্বীপের মৎস্যজীবীরা।

মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল বলেন, ‘খসকি জাল অবৈধ। খসকি উচ্ছেদের জন্য আমার কাছে প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল ও সরঞ্জাম নেই। তাছাড়া এসবের জন্য পর্যাপ্ত সরকারি বরাদ্দও নেই। তাই অভিযান পরিচালনা করতে বিলম্ব হচ্ছে।’

কোস্ট গার্ড পূর্ব অঞ্চলের (চট্টগ্রাম) মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জিয়া বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত অভিযান চলমান আছে। মৎস্য কর্মকর্তা আমাদের থেকে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!