নিলামের বাজার কাঁপাচ্ছে ‘হোয়াইট টি’, এক কেজির দাম উঠল ৫০১০ টাকা

চট্টগ্রামের নিলামে যে চা পাতার দাম ওঠেছিল প্রতি কেজি ৪ হাজার ৩০০ টাকা, শ্রীমঙ্গলের নিলামে সেই একই চা পাতার বিক্রি হল ৫ হাজার ১০ টাকা কেজি দরে। এই চা পাতার নাম ‘হোয়াইট টি’।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় চা নিলাম কেন্দ্রে ১৭তম নিলামে এক কেজি ‘হোয়াইট টি’ বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১০ টাকায়। নিলামে তোলা হয়েছিল মোট তিন কেজি চা। আর নিলাম থেকে এই চা কিনে নেয় সেলিম টি হাউজ।

এর আগে চট্টগ্রামে ৩৪তম নিলামে ৫ কেজি হোয়াইট টি বিক্রি হয়েছিল ৪ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে। তবে বাংলাদেশ এক সময় এই চায়ের দাম আরো অনেক বেশি পাওয়া যাবে বলে চা ব্যবসায়ীরা আশাবাদী।

এটি ছিল বৃন্দাবন চা বাগানের চা। শ্রীমঙ্গল টি ব্রোকার লিমিটেডের এমডি হেলাল আহম্মদ বলেন, ‘আমরা মাত্র তিন কেজি হোয়াইট টি পেয়েছিলাম। এতো দামে বিক্রি হবে তা আগে ভাবতে পারিনি। এই দাম পেয়ে আমি খুশি।’

‘হোয়াইট টি’র ক্রেতা সেলিম টি হাউজের মালিক সেলিম আহম্মেদ বলেন, ‘বাজারে হোয়াইট টি’র চাহিদা রয়েছে। তাই আমরা এতো বেশি দাম দিয়ে এই চা কিনেছি।’

বৃন্দাবন চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো.নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘আসলে ভারতে মনোহরী টি কোম্পানি পরীক্ষামূলক এক কেজি হোয়াইট টি উৎপাদন করেছিল। সেই চা টাটা কোম্পানি নিলাম থেকে কিনেছিল ৭০ হাজার রুপি দিয়ে। তাদেরটা দেখে আমিও বাগানে আট কেজি হোয়াইট উৎপাদন করি।’

চা পাতা পরিপূর্ণভাবে চোখ মেললে গাছ থেকে তুলে ফেলা হয় সযতনে। একটি একটি করে মমতামিশ্রিত হাতের ছোঁয়ায় এসে কোমল-বন্ধ কুঁড়িগুলো ঠাঁই পায় ফ্যাক্টরিতে। তারপর প্রক্রিয়াজাতকরণের পর তৈরি হয় স্বাস্থ্যসম্মত ‘হোয়াইট-টি’।

আমাদের চিরচেনা নরমাল চা অর্থাৎ ‘ব্ল্যাক-টি’ কিংবা অপর ভিন্ন একটি প্রক্রিয়ার চা ‘গ্রিন-টি’ থেকে এর পার্থক্য অনেক। ব্ল্যাক-টি এবং গ্রিন-টি দুটোই কিছুটা কালো রঙের। আর হোয়াইট-টি এর পাতাগুলোর মাঝে কিছুটা সাদা রঙের আভা থাকে।

হোয়াইট-টি তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় চা গাছের একটি বন্ধ কুঁঁড়ি। অর্থাৎ যে কুঁঁড়ি এখনো প্রস্ফুটিত হয়নি। সেই বন্ধ কুঁড়িগুলোকে একটি একটি করে চা গাছ থেকে তুলে প্রক্রিয়াকরণের পরই এই বিশেষ চা তৈরি হয়।

এই চায়ের রঙ পিত-হলুদ বা পিতলের মতো হলুদ। এর মূল রঙটা সবুজ ও হলুদ রঙের মাঝামাঝি। একে হোয়াইট-টি বলার কারণ হলো এর গায়ে সাদা লোম রয়েছে। একে কেউ কেউ বলেন, ‘সিলভার নিডল হোয়াইট-টি’ বা রূপার সুঁইয়ের মতো সাদা চা।

এ চায়ের পাতা উত্তোলনে নেয়া হয় কঠিন মান নিয়ন্ত্রণ। পাতায় কোনো পানি থাকতে পারবে না। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে পাতা চয়নের কাজ শেষ করতে হবে। পাতা উত্তোলনের সময় হলো সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এবং ফেব্রুয়ারি-মার্চ।

‘হোয়াইট-টি’ মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা তারুণ্য বজায় রাখে এবং ক্লান্তি দূর করে মনকে ঝরঝরে করে তোলে। আরো একটি বিশেষ গুণ হলো এই চা ফ্যাট বা চর্বি কমায়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!