সেন্টমার্টিনে ১২০০ পর্যটকের রুদ্ধশ্বাস ১০০ ঘন্টা

অবশেষে নিরাপদে ফিরেছেন ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সেন্টমার্টিনে আটকেপড়া পর্যটকরা। গত শুক্রবার থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় এক হাজার ২০০ পর্যটক সেন্টমার্টিনে আটকে ছিলেন। আটকেপড়া পর্যটকরা সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকালে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাটে পৌঁছলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এদিকে সিগন্যাল না থাকায় সোমবার সেন্টমার্টিন ভ্রমণে গেছেন প্রায় ৩০০ পর্যটক।

এর আগে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, আটলান্টিক ক্রুজ ও ফরহান ক্রুজ নামে জাহাজ তিনটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় জাহাজ তিনটি সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়। দুপুর ২টায় পর্যটকদের নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশ্যে আবার রওনা করে জাহাজগুলো এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় টেকনাফে পৌঁছে।

বিকালে সেন্টমার্টিন থেকে ফেরা পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উদ্বেগের মধ্যে থাকলেও দ্বীপে অবস্থানে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছিল। হোটেল-রেস্টুরেন্টে ৫০ ভাগ ছাড়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। নিরাপদে ফিরতে পারায় পর্যটকরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

কথা হয় চট্টগ্রাম ষোলশহর এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ও রুবেলের সাথে। তারা জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ে কী হয় না হয় তা নিয়ে উদ্বেগে থাকলেও দ্বীপবাসীর সহযোগিতায় সে উদ্বেগ কেটে যায়।’

সাতক্ষীরার ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘নিরাপদে ফিরতে পারায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।’

সেন্টমার্টিনে ১২০০ পর্যটকের রুদ্ধশ্বাস ১০০ ঘন্টা 1
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা

মানিকগঞ্জের পর্যটক সোহাগ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগে থাকলেও যথেষ্ট আনন্দ উপভোগ করেছি।’

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদের সব সদস্য ও দ্বীপের আইনশৃংখলা বাহিনী সদস্যরা কাজ করছেন। আটকেপড়া পর্যটকেরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়েন, আমরা সেই চেষ্টা করেছি। সোমবার আরও ৩০০ পর্যটক দ্বীপ ভ্রমণে গেছেন বলেও জানান তিনি।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বীপে আটকাপড়া পর্যটকরা যাতে কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখা হয়েছিল। পর্যটকরা নিরাপদে ফিরতে পারায় উদ্বেগ কেটে গেছে।’

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে শুক্রবার হঠাৎ করে বৈরি আবহাওয়া এবং সাগরে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। ফলে প্রবালদ্বীপে আটকা পড়েন এসব পর্যটক।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!