“নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বাসায় ফিরে আবার অপহৃত হলো সেই স্কুল ছাত্রী”

SAMSUNG CAMERA PICTURES

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,৩ এপ্রিল।। বরিশাল নিরাপত্তা হেফাজত থেকে জিম্মায় এনে একদিনও স্কুল পড়–য়া মেয়ে সুমনা ইসলাম নওরিন (১৫) কে কাছে রাখতে পারেনি তার বাবা-মা। গত ১০ মার্চ সন্ধায় মায়ের পাশে ঘুমন্ত অবস্থায় নওরিনকে অপহরন করে সুজন হাওলাদারের (২২) নেতৃত্বে ৫/৭ যুবক। একমাত্র মেয়েকে উদ্ধারের জন্য আবারও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াছে অসহায় মো. নুরুল ইসলাম ও রাজিয়া সুলতানা দম্পতি। পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের নাচনাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কলাপাড়া উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করলেও ঘটনার ২৪ দিনেও পুলিশ নওরিনকে উদ্ধার কিংবা অপহরনকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
শুক্রবার সকালে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মো. নুরুল ইসলাম ও রাজিয়া সুলতানা দম্পতি বলেন, ১০ মার্চ (মঙ্গলবার) সন্ধার পর সুজনের নেতৃত্বে ৫/৭ যুবক আকস্মিক ঘরে প্রবেশ করে তাদের কাছ থেকে জোড়পূর্বক দ্বিতীয়বার অপহরন করে নিয়ে যায় নওরিনকে। ঘটনার একদিন আগে (৮মার্চ) নওরিনকে বরিশাল নিরাপত্তা হেফাজত থেকে আদালতের মাধ্যমে তাদের জিম্মায় নিয়ে আসেন। কিন্তু অপহরনকারীরা আবার তাকে অপহরন করে।
কলাপাড়ার খেপুপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী নওরিন কে গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে প্রথম দফায় অপহরন করে সুজনের নেতৃত্বে অপহরনকারীরা। এ ঘটনায় ৬ ফ্রেবুয়ারি সুজন চা বিক্রেতা হারুন হাওলাদারসহ তার তিন ছেলে সুজন হাওলাদার, রাসেল হাওলাদার, রিয়াজ হাওলাদার, সোহেল হাওলাদার, এবং একই এলাকার মোতাহার ফকির ও মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অপহরনকারী সুজনের পিতা হারুন হাওলাদারকে চাপপ্রয়োগ করলে অপহরনের ছয়দিন পর ১১ ফেব্রুয়ারি অপহরনকারীরা নওরিনকে কলাপাড়া-পটুয়াখালী সড়কে ফেলে রেখে পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ১২ ফেব্রুয়ারি নওরিনের বয়স নির্ধারনের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে তাকে বরিশাল নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেয়।
মেডিকেল রিপোর্টে নওরিনের বয়স ১৩/১৪ বছর বলে প্রতিবেদন দিলে গত ৮ মার্চ আদালত নওরিনকে তা অভিভাবকদের জিম্মায় দেয়। কিন্তু ১০ মার্চ তাকে আবার অপহরন করে ওই অপহরনকারীরা।
নওরিনের পিতা নুরুল ইসলামের আর্তি তাঁর একমাত্র মেয়ের এখনও বিয়ের বয়স হয়নি। কিন্তু তিনি শুনেছেন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সুজন তাকে বিয়ে করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় গত ১৯ মার্চ কলাপাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। আদালত কলাপাড়া থানা পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। বরং অপহরনকারীরা তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে  এবং পুলিশের সাথে অপহরনকারীদের সখ্যতা আছে বলে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া সহকারী পুলিশ সুপার মো. মইনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ নওরিনকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নওরিনের বাবা-মা’র অভিযোগ মিথ্যা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!