নালায় ময়লা ফেললেই শাস্তি চায় সেনাবাহিনী, লক্ষ্য জলাবদ্ধতা নিরসন

গণমাধ্যমের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্রিগেডের মতবিনিময়

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল ও নালা থেকে ময়লা উত্তোলনের পরও কিছুদিন যেতে না যেতেই সেটি আগের রূপে ফিরে আসছে। ফলে প্রকল্পের প্রাথমিক সুবিধা মিলছে না কোনোভাবেই। এ নিয়ে সেনাবাহিনী-সিডিএ ও সিটি করপোরেশন নানা সময়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালালেও তা কোনো কাজেই আসছে না। এ অবস্থায় প্রকল্পের দ্বিতীয় বছরে এসে নালা ও খাল ময়লা ফেলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার চিন্তা করছে সেনাবাহিনী। তবে সেটা কীভাবে কখন থেকে শুরু হবে এখনো নির্ধারিত হয়নি।

শনিবার দুপুরে নগরীর দামপাড়াস্থ ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্রিগেড (ইসিবি) এর সদর দপ্তরে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ব্রিগেড মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী।

চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধাতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংষ্কার ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে এই প্রথম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সেনাবাহিনী।

জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে চট্টগ্রামের এক সাংবাদিক নালা ও খালে ময়লা ফেলার জন্য স্থানীয় দোকানদার ও বাসিন্দাদের দায়ী করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনার পরামর্শ দেন। এসময় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ইউনিটের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকীও বিষয়টিতে সায় দেন।

তিনি বলেন, ‌‌‌‌’জলাবদ্ধতা নিরসনে নানারকমের সচেতনতামূলক কার্যক্রম করা হলেও সেটা কোনো কাজে আসে না। আমরা খাল-নালা পরিস্কার করলেও কদিন যেতে না যেতেই আগরে রূপে ফিরে আসছে। তাই স্ব স্ব স্থান থেকে যদি সচেতন হওয়া না যায় তাহলে জলাবদ্ধতা নিরসনের সুফল পাওয়া সম্ভব না। যারা ময়লা ফেলে তারা বাইর থেকে আসা কেউ না। আমি আপনি আমাদের সবার পরিচত তারা। এখন চিন্তা করছি যেখানে ময়লা ফেলবে সেখানকার বাসিন্দা-দোকানদারদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা দরকার। যারা ময়লা নালা বা খালে ফেলবে তাদের কীভাবে শাস্তির আওতায় আনব বিষয়টি নিয়ে ভাবছি।’

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত মেগা প্রকল্পের ব্যাপারে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল নগরীর রেডিসন ব্লুতে সেনাবাহিনীর সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ওই মাসেই বহুল প্রত্যাশিত এ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। বর্ষা মৌসুমের আগেই খালগুলোর মাটি অপসারণ এবং নতুন ড্রেন নির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছিল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ।

চট্টগ্রাম নগরবাসীকে রক্ষায় গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এর দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। তারা খালের দুপাশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। এছাড়া নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ২০২০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরে ৩৬টি খাল, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২টি বালির ফাঁদসহ (সিল্ট ট্র্যাপ) নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা জানায় ওই সময়।

এডি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!