নাছিরের শেষ/ ২৪৮৬ কোটির অনুদাননির্ভর বাজেট চসিকের
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য অনুদাননির্ভর ২ হাজার ৪৮৫ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের (টিআইসি) মূল মিলনায়তনে নিজ মেয়াদের শেষ বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
তিনি একই সঙ্গে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২ হাজার ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৯৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও ঘোষণা করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে নিজস্ব উৎস থেকে মোট প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৭৩২ কোটি ২৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে আয় হয়েছে ৪৪৮ কোটি ৭৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। উন্নয়ন অনুদান হিসাবে প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ১৭০২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এ খাতে চসিক পেয়েছে ১৫৫৫ কোটি ৮৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ঘোষিত পঞ্চম বাজেটে নগর উন্নয়নে সর্বোচ্চ ১৬১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পারিশ্রমিক ব্যয় বাবদ। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮২ কোটি ৯০ লাখ হাজার টাকা। এরপর ভান্ডার খাতে ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এবারের বাজেটে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৪২৫ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেটের বিপরীতে ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। যা মোট অংকে দাঁড়ায় ২০৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
যেভাবে হবে বাজেটের যোগান
বাজেটে বকেয়া কর ও অভিকর থেকে ধরা হয়েছে ২০১ কোটি ৮৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা; হাল ও অভিকর ১৪৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, অন্যান্য করাদি ১৩২ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার, ফিস ১১১ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার, জরিমানা ৫০ লাখ, সম্পদ থেকে ভাড়া ৯১ কোটি ৫৫ লাখ, ব্যাংক স্থিতি থেকে আয় ৫ কোটি, বিবিধ খাতে আয় ২০ কোটি ৬৯ লাখ এবং ভর্তুকি থেকে ২৪ কোটি ৭৫ লাখসহ নিজস্ব উৎস থেকে মোট প্রাপ্তি ৭৩২ কোটি ২৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
অন্যদিকে ত্রাণ সাহায্য ২০ লাখ, উন্নয়ন অনুদান ১৭০২ কোটি এবং অন্যান্য উৎসে ৫১ কোটি ৪৫ লাখসহ বাহ্যিক উৎস থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৭৫৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
বাহ্যিক উৎসের মধ্যে থোক বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি, বিএমডিএফের অর্থায়ন ৮০ কোটি, নতুন খাল খনন ৩০ কোটি, জাইকা প্রস্তাবিত প্রকল্প ১৫০ কোটি, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা উন্নয়নে ১৩৭ কোটি, সিটি গভর্নেন্স প্রকল্প ৩০ কোটি; সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম প্রকল্প ১০০ কোটি, সড়ক নেটকওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস-ট্রাক নির্মাণ প্রকল্পে ৪০০ কোটি, পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিবাস প্রকল্পে ১০০ কোটি, সড়ক ও ব্রিজ উন্নয়ন প্রকল্পে ২৭৫ কোটি, নগর ভবন নির্মাণ ২৫ কোটি, বিন্না ঘাস প্রকল্পে ৩ কোটি, এয়ারপোর্ট রোড সম্প্রসারণ প্রকল্পে ১০ কোটি, স্মার্ট সিটি প্রকল্পে ১০ কোটি এবং অন্যান্য প্রকল্পে ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা।
যেভাবে হবে বাজেটের ব্যয়
বাজেটে বেতন ভাতা ও পারিশ্রমিক খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮২ কোটি ৯০ লাখ টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ কোটি ৪৫ লাখ, ভাড়া-কর ও অভিকর ৬ কোটি ৭০ লাখ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি ৪৬ কোটি ৩০ লাখ, কল্যাণমূলক ব্যয় ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ, ডাক ও তার ১ কোটি ৬৬ লাখ, আতিথেয়তা ও উৎসব ৫ কোটি, বীমা ৫৫ লাখ, ভ্রমণ ও যাতায়াত ১ কোটি ৫৫ লাখ, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা ৫ কোটি ৮৫ লাখ, মুদ্রণ ও মনিহারি ৫ কোটি ৪০ লাখ, ফিস, বৃত্তি, পেশাগত ব্যয় ১ কোটি ২৩ লাখ, প্রশিক্ষণ ব্যয় ৮৫ লাখ, বিবিধ ব্যয় ২১ কোটি ২৪ লাখ ২৫ হাজার এবং ভান্ডার ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
উন্নয়নমূলক ব্যয়ের মধ্যে ত্রাণ ব্যয় ২০ লাখ, বকেয়া দেনা ১৭৩ কোটি ৪০ লাখ, স্থায়ী সম্পদ ১১২ কোটি, উন্নয়ন ১৬১৬ কোটি এবং অন্যান্য ব্যয় ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এমএ/সিপি