নতুন মেয়রকে নগর পরিচালনার রূপরেখা দিতে চান সুজন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র রেজাউল করিমের জন্য নগর পরিচালনার রূপরেখা তৈরি করেছেন সংস্থাটির সদ্য বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। সেটি তিনি রেজাউল করিমের কাছে হস্তান্তর করতে চান।

বৃহস্পতিবার (৪ফেব্রুয়ারি) নগরীর জামালখানের সিনিয়রস্ ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানিয়েছেন খোরশেদ আলম সুজন।

এ সময় সুজন বলেন, ‘আমি সবসময় নতুন মেয়রের পাশে থাকবো। রেজাউল করিম একজন কর্মঠ, অভিজ্ঞ ও সৎ লোক। নগর পরিচালনায় যদি আমার কোন সাহায্য দরকার হয় চিন্তা ছাড়াই আমি সাহায্য করববো। নতুন মেয়রের জন্য আমি একটি নগর পরিচালনার রুপ রেখাও তৈরি করে দিয়েছি। সেটা আমি রেজাউল করিমকে দিতে চাই।’

মতবিনিময় সভায় সুজন তাঁর ১৮০ দিন দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, কাজ করতে গেলে ভালো, কথা খারাপ কথা উভয়ই শুনতে হবে। আমিও কাজ করতে গিয়ে মানুষের যেমন গালি শুনেছি, তেমনি ভালবাসাও পেয়েছি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বন্দর নগরীকে বাসযোগ্য করে তুলতে নিজের সাধ্যের সবটুকু বিলিয়ে দিয়েছি।’

চসিকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সুজন বলেম, ‘আমাদের সিটি কর্পোরেশান পৌরসভা থেকে হয়েছে। কিন্তু এখনো অনেকের মন মানসিকতা সেই পৌরসভার মত রয়ে গেছে। দিনের ১২টায়ও অনেকে অফিসে আসতো আর গভীর রাত পর্যন্ত অফিস করতো। তারা যে রাতের অন্ধবারে টেবিলের নিচ দিয়ে ঘুষ নেওয়ার জন্য অফিস করতো তা আমি বুঝতে পারি। আমি সকলের জন্য অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাধ্যতামুলক করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চসিকের অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে কাজ না করে বেতন তোলার অভিযোগ। ডিউটি করেনা কিন্তু হাজিরা খাতায় ঠিকই স্বাক্ষর রয়েছে। এ কারনে আমি মেয়র মঞ্জুর আমলে যে ভিক্ষুকদের চাকরি দেওয়া হয়েছে তাদের চাকরি থেকে বের করে দিয়েছি। কারণ তারা ভিক্ষা করে সারাদিন আর মাস শেষ হলে বেতন তুলে। এ রকম অকর্মন্য কর্মচারীর দরকার নেই চসিকের।’

চট্টগ্রামের বন্দরের ও রড কোম্পানীর গাড়িগুলোর জন্য পিসি রোডের বেহাল অবস্থা হয়েছে বলে দাবি করে সুজন বলেন, ‘রড় কোম্পানী ও বন্দরের বড় বড় গাড়িগুলো চলে রোড়টা শেষ করে দিয়েছে। সেজন্য পোর্ট ডিউস থেকে ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে বন্দরকে। আর কাষ্টম হাউজের রাজস্ব থেকেও দিতে হবে ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ। আর ইপিজেড ও সিইপিজেডের ১ হাজার ২০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১৪টি প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স আছে। ইপিজেড এলাকায় তাদের গার্মেন্টসগুলোতে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে। আমরা তাদের শ্রমিকদের জন্য রাস্তা মেরামত করব, তাদের জন্য লাইট লাগাবো, তাদের ময়লা আমরা বিনামূল্যে পরিষ্কার করবো তাতো হতে পারেনা। আমরা তাদের শ্রমিকদের সার্ভিস দেওয়ার বিনিময়ে তাদেরকেও আমাদের প্রতি কারখানা থেকে বছরে ২ হাজার ডলার দিতে হবে। আর এসব যদি নেওয়া যায় তাহলে সিটি কর্পোরেশান নিজের টাকায় নিজে চলতেতো পারবে। উল্টো আশে পাশের দুই চারটা পৌরসভাকেও চালাতে পারবে।’

সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুজন বলেন, ‘আপনারা সবসময় যেভাবে আমাকে সার্পোট দিয়েছেন, আমার পাশে থেকেছেন তার ঋণ কখনো আমি শোধ করতে পারব না। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

বিশ্বজিৎ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!