নগর বিএনপির বিবর্ণ সমাবেশ রঙিন হল যুবদলের রক্তে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বরাবরের মতো দায়সারা গোছের সমাবেশ আয়োজন করে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি। তবে শেষপর্যন্ত বিবর্ণ-সাদামাটা সমাবেশ আর বিবর্ণ থাকেনি। সমাবেশ শুরুর একঘন্টার মাথায় শামসু গ্রুপের হাতে নগর যুবদলের প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত হয়ে সমাবেশকে রাঙিয়ে তোলেন। এর জেরে তিন দফা মারামারি ছড়িয়ে পড়ে দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে।

১ সেপ্টেম্বর (রোববার) বিকেল ৩টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও জনবল সংকটে আধঘন্টা পর তা শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে নাসিমন ভবন চত্বর।

বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি শামসুল হক সমাবেশ থেকে বের হয়ে যান তার কিছু অনুসারীকে নিয়ে। মিনিটদশেক পর লাভলেইন হয়ে একটা মিছিল নিয়ে তিনি সমাবেশে প্রবেশ করেন। তার অনুসারীরা স্লোগান দিয়ে আগ থেকে সমাবেশের চেয়ারে বসে থাকা নেতাকর্মীদের সাথে ধাক্কাধাকি করে। এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি রূপ নেয় চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি ও ভাঙচুরে। তারপর শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।

জিল্লুর রহমান জুয়েলকে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জিল্লুর রহমান জুয়েলকে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিকেল সাড়ে ৪টায় নগর যুবদলের প্রচার সম্পাদক (১) জিল্লুর রহমান জুয়েলকে তার সহযোগীরা রক্তাক্ত অবস্থায় সিএনজিচালিত টেক্সিযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ থানার যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির এবং বাবুল হোসেনকেও আহত অবস্থায় তার সহযোগীরা চমেক হাসপাতালে নিয়ে যান।

এ ব্যাপারে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কর্মসূচি ছিল আমাদের অভিভাবক সংগঠনের। সেখানে উনাদের উপস্থিতিতেই মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমরা উনাদের সিদ্ধান্তের দিকে চেয়ে আছি।’

মারামারি ঘটনায় অভিযুক্ত শামসুল হক বলেন, ‘মারামারির সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। মিছিল সমাবেশস্থলে পৌঁছে দিয়ে আমি বের হয়েছিলাম। তবে আমাদের মনির, সুমনসহ প্রায় সাত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’

মারামারির পর আধঘন্টা চলে সমাবেশ। সমাবেশে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল আলম, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, মহিলা দলের সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম মনি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খানসহ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এর আগে বেলা ১১টায় নগরীর ষোলশহরে ২ নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে সমাবেশ করেন। সমাবেশে নগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ ছাড়াও যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, মোহাম্মদ শাহেদ, যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্যে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতির ক্রান্তিকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর দেশের হাল ধরেছিলেন। ১৫ আগস্টের ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে। অথচ খন্দকার মোশতাক আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতারা মোশতাকের মন্ত্রিসভায় স্থান নেওয়ার জন্য লাইন ধরেছিলেন।

বিএনপি নেতারা দাবি করেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সরকার বন্দি করে রেখেছে। তারা অবিলম্বে দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবি করেন।

এফএম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!