নগরীর ৫ খালের গতি ফেরাতে মাঠে নামলেন কাউন্সিলর এসরাল

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চান্দগাঁও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুঃখ পাঁচটি খাল। এই খালগুলো এখন প্রায় ভরাট। এগুলোর কোনো কোনো অংশের উপর উঠে গেছে ঘাস। কোনো কোনো অংশে উঠেছে গাছও।

চান্দগাঁও ওয়ার্ডের পাটানিয়াগোদা ডোমখালটি সবচেয়ে বড় খাল, ফরিদের পাড়ার বড়খাল, হাজীরপুল খাল, বেপারীপাড়া খাল এবং খ্রীষ্টানপাড়া বড় খালের অবস্থা এমনই। বর্ষার বৃষ্টির পানি এই খালগুলো হয়ে নদীতে যেতে পারে না বলে এই এলাকায় হচ্ছে জলাবদ্ধতা।

অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নির্লিপ্ততা ও সমন্বয়হীনতার ফলে দিনদিন দূর্ভোগ বাড়ছে নগরবাসীর। বর্ষা মৌসুমে হাটুপানির কারণে এই দূর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে চরমমাত্রায়। এবারের বর্ষায় জলজট আরও বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

তারা বলেছেন, এবারের বর্ষাকাল হতে পারে বৃষ্টিমুখর। এই বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা ও জলজট আগের বছরের তুললায় আরও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তারা।

এ নিয়ে শংকিত এলাকার মানুষকে জলজটমুক্ত রাখতে ১৪ মে থেকে খালের গতি ফেরানো ও নালা পরিস্কার রাখতে দিনরাত কাজ করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এসরাল হক।

সরেজমিনে দেখা যায়, চসিকের এই ওয়ার্ডে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকার খাল ও নালাসমূহ ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়ে পানি নিস্কাশনের কোনো উপায় নেই। চান্দগাঁও ওয়ার্ডের পাটানিয়াগোদা ডোমখালটি সবচেয়ে বড় খাল। এটির সঙ্গে সংযোগ রয়েছে নগরের আরও কয়েকটি খাল ও কয়েকশ নালার। এটি ভরাট হয়ে পানি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এই খালের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থার ধীরগতির বেশ প্রভাব পড়ছে পুরো নগরজুড়ে।

এছাড়া এই ওয়ার্ডে ফরিদের পাড়ার বড়খাল, হাজীরপুল খাল, বেপারীপাড়া খাল এবং খ্রীষ্টানপাড়া বড় খালের অবস্থাও বেশ নাজুক।

খাল ও নিম্নভূমি ভরাটের ফলে এলাকার মানুষকে সেই জলাবদ্ধতার অভিশাপমুক্ত রাখতে নিয়মিত পরিষ্কার অভিযান শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর চান্দঁগাও ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মো. এসরাইল হক। তিনি গত ১৪ মে থেকে এই অভিযান শুরু করেন। নতুন কাউন্সিলরের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

তারা মনে করেন, এমন উদ্যোগ নগরের সব কাউন্সিলররা যদি একযোগে পরিচালনা করেন তাহলে নগরবাসী অচিরেই জলবদ্ধতার অভিশাপমুক্ত হবেন।

চান্দঁগাও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা এনআরএফএল প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসানুল হক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রতিটি বর্ষায় চান্দঁগাও আবাসিকে হাটুপানি জমে যায়। এতে মানুষের স্বাভাবিক যাতায়াত ও যানচলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ে।’ এই দুর্ভোগের জন্য খাল-নালা দখল ও ভরাটকেই দুষছেন তিনি।

চসিকের ৪ নম্বর চান্দঁগাও ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মো. এসরাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা দেখি, বর্ষাকাল এলে জলাবদ্ধতা নিয়ে ভোগান্তি হয়। নির্বাচনের আগে আমাদের মৌখিক প্রতিশ্রুতি থাকে—তা দূর করা। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পর অনেকেই ভুলে যান। আমি কথা রাখার চেষ্টা করছি। এতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম।’

তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন থেকে ভরাট হওয়া খাল ও নালাসমূহ পরিষ্কার করার ফলে খালের অস্তিত্ব অনেকটাই দৃশ্যমান এখন। তবে এর জন্য এলাকার মানুষকেও সচেতন হতে হবে আন্তরিকতার সঙ্গে৷ যত্রতত্র ময়লা আর্বজনা ফেলা থেকে বিরত থেকে অন্যকেও উৎসাহী করতে হবে।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!