নগরীর ১১ ওয়ার্ডে পয়ঃনিষ্কাশন উন্নয়নে ওয়াসার ৩ হাজার ৮oo কোটি টাকার প্রকল্প

চট্টগ্রাম শহরের সুপেয় পানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশনের দায়িত্ব থাকলেও এতো দিন তা ছিল কাগজে কলমে। কিন্তু এবার নগরীর ১১টি ওয়ার্ডের পয়ঃনিয়ষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ৫বছর মেয়াদী একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে ওয়াসা। এর সুফল ভোগ করবে প্রায় ২০ লাখ নগরবাসী।

এ উপলক্ষ্যে শনিবার (২৩ নভেম্বর) নগরীর রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ’র মেজবান হলে চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পে (১ম পর্যায়) পরামর্শক নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফয়জুল্লাহ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম, মালেশিয়ার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জেবি এরিঙ্কোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তনুশ্রী আই আর জাহেদ ইবনে আহমেদ লাদেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড মেম্বার শওকত হোসেন ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নগরীতে স্যানিটেশন সুবিধাদি নিশ্চিত করার লক্ষে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ৬ ভাগে ভাগ করে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। এই প্রকল্প ব্যাস্তবায়ন হলে কর্ণফুলী দূষণ থেকে রক্ষা পাবে। ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫ হাজার ৮৭৭ লাখ টাকা। যার মধ্যে ৩ হাজার ৭৫৮ কোটি ৫ হাজার ৮৭৭ লাখ টাকা জিওবি’র অনুদান এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে ৫০ কোটি টাকা।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো-মালয়েশিয়া ভিত্তিক জেবি অফ এরিঙ্কো এবং বাংলাদেশের বিইটিএস কনসাল্টিং সার্ভিস লিমিটেড, ডেভ কনসালট্যান্ট লিমিটেড, ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)। প্রথম ধাপে ১১টি ওয়ার্ডের ২০ লাখ নগরবাসীর পয়ঃবর্জ্য স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে।

ওয়ার্ডগুলো হলো- এ প্রকল্পটি নগরীর উত্তর হালিশহর, নয়াবাজার, রামপুর, পাহাড়তলী, আমবাগান, লালখান বাজার, আসকারদিঘী, কোতোয়ালি, ফিরিঙ্গি বাজার, সদরঘাট, দক্ষিণ আগ্রাবাদ, সল্টগোলা ক্রসিং এলাকাগুলোতে বাস্তবায়ন হবে। এই প্রকল্পের ফলে নগরীর ২০ লাখ মানুষ সুবিধা ভোগ করবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সন্তোষজনক হলেও স্যানিটেশন অবকাঠামোর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। একটি পরিকল্পিত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় একসময় পানি সংকট তৈরি হয় আগ্রাবাদ সিডিএ এবং হালিশহর এলাকায়। পরে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পানি সংকট নিরসন হয়। এরকম ব্যয়বহুল প্রকল্পের ফলটা যাতে ভালো হয় সে ব্যাপারে সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমি কখনো জাতীয় স্বার্থে আপোষ করি না। চট্টগ্রাম ওয়াসার আরও ৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে যার প্রতিটির ব্যয় ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে পানির সংকট নিরসন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রাম নগরীরতে ৪০% মানুষ পানি পেতো না। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পানি সংকট নিরসন হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীতে ১০০ ভাগ পানির ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য পানি শোধনাগার স্থাপন করা হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আগে লক্ষ্য ছিল এমডিজি (মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল), তা অর্জন করেছি। এসডিজি-৪ (সাসটেইনেবল ভেভেলপমেন্ট গোল) প্রকল্পে ২০৩০ সালের মধ্যে পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে চাই।’

এডি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!