ঝগড়া কিংবা রাগ হলে একসময় মানুষ একে অন্যের সাথে দেখা করা অথবা কথা বলা বন্ধ করে দিতো। তারপর একসময় সেই রাগ এমনিতেই কমে যেতো। আবার সখ্য হতো। কিন্তু দিনকে দিন মানুষ যে জন্তুতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষের রাগ প্রতিশোধের স্পৃহায় রুপ নিচ্ছে। যার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না অবলা প্রাণীও। তুচ্ছ ঘটনায় হয়ে উঠেছে খুনি। যেখানে মানুষ খুন করতেও মানুষের দ্বিধা হয় না। বুক কাঁপে না সেখানে অবলা জীব অনেক দূরের কথা। মানুষ খুন করলেই খুনি নাকি অবলা জীবের প্রাণ কেড়ে নেয়াও খুন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে কেবল ক্ষেতের ধান খাওয়ায় বিষ মাখানো ধান ছিটিয়ে ১৩টি মুরগি খুন করে ধান ক্ষেতের মালিক। আর এরকমই এক ঘটনা ঘটেছে সাতকানিয়া উপজেলার গারাঙ্গিয়া এলাকার রঙ্গিপাড়ায়।
প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রহিম বলেন, ‘মৃত মুরগিগুলো ছিল পাশের বাড়ির কোনো এক গৃহিনীর পালিত মুরগি। সবসময় মুরগিগুলো এখানে এসে ক্ষেতের মালিকের ধান খেয়ে ফেলে। তাই ক্ষেতের চারপাশে বিষ মাখানো ধান ছিটিয়ে মুরগিগুলোকে খুন করেছে মালিক। এ কেমন নির্মমতা আর নিষ্ঠুরতার শিকার অবুঝ প্রাণী!’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী নেওয়াজ হোসেন নিশাত জানান, ‘এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি অনেকগুলো মুরগি পড়ে আছে। কাদের মুরগি তা জানি না। পরে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি ধান খায় বলে বিষ দিয়ে মেরে ফেলছে। যাতে আর ধান খেতে না পারে মুরগি গুলো। কিন্তু এভাবে অবলা জীব মেরে ফেলা খুবই মর্মান্তিক ঘটনা । মানসিকভাবে অসুস্থ না হলে এমন কাজ কেউ করতে পারে না।’
এ প্রসঙ্গে সমাজকর্মী দিলরুবা খানম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মানুষ তার নৃশংসতার পরিচয় দিচ্ছে পশুর ওপর। কেবল মানুষ মারলেই যে খুনি তা তো নয়। অবুঝ প্রাণীদেরও বিনা কারণে মেরে ফেললে তাকেও খুনি বলতে হবে।’
এদিকে ব্রিটিশ আমলে বাস্তবায়ন করা ‘ পশু নির্যাতন আইন- ১৯২০’ এ উল্লেখ আছে, কেউ অপ্রয়োজনীয় নির্যাতনের দ্বারা পশু হত্যা করলে পশু নির্যাতন আইন ১৯২০ ধারা ৭ অনুযায়ী তার শাস্তি ২০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।
এসআর/সিপি