ধর্ষিতার হাতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ‘সমঝোতা’, আওয়ামী লীগ নেতার কাণ্ড

এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে পুলিশে না দিয়ে স্থানীয়ভাবে বৈঠকের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে ‘সমঝোতা’ করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক আল আমিন পেশায় একজন ট্রাকচালক।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে থলিপাড়া ক্লাব ঘরে টাকা দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সালিশ বৈঠকের নেতৃত্ব দেন মহালছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল। তিনি মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও।

জানা গেছে, গত সোমবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় মহালছড়ির ওই কিশোরী থলিপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয়। কিন্তু প্রভাবশালীদের হুমকিতে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লেও ভয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালেও যেতে পারছে না।

মহালছড়ি থানা পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে টিম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ধর্ষিত কিশোরীর পরিবার এ বিষয়ে আইনি সহায়তা নিতে অনীহা প্রকাশ করায় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) থলিপাড়া ক্লাব ঘরে একটি সালিশ বৈঠক ডাকেন মহালছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন কুমার শীল। থলিপাড়া মৌজার হেডম্যান কালাচান চৌধুরীও এতে উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ওই সালিশ বৈঠকে ধর্ষিত কিশোরীকে চিকিৎসা করানোর জন্য অভিযুক্ত যুবকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে দেন চেয়ারম্যান রতন শীল। সালিশে সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনার ব্যাপারে ধর্ষিত কিশোরীর পরিবার কোনো আইনি আশ্রয় নিতে পারবে না। এমনকি কাউকে কিছু না বলতেও দরিদ্র ওই পরিবারটিকে চাপ দেওয়া হয়। ধর্ষিত শিকার কিশোরীর পিতা একজন জুমচাষী।

মহালছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন কুমার শীল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটি প্রেমঘটিত ব্যাপার। ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাতের বেলায় তারা দুজন দেখা করেছিল। পরে সালিশে তাদের মধ্যে সমঝোতা করে দেওয়া হয়। মেয়েটি যেহেতু লেখাপড়া করে, তাই তাকে ৫-১০ হাজার টাকা নিতে যেতে বলা হয়েছে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!