ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি শিক্ষার্থীদের

চট্টগ্রামে মানববন্ধন

দেশজুড়ে অব্যাহত ধর্ষণের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীর দশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একযোগে রাস্তায় এসে প্রতিবাদ জানিয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। অন্যদিকে রোববার দুপুরে (১৪ জুলাই) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।

এ সময় তারা ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে স্লোগান দেন। মিছিল-স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকমুক্ত বাংলাদেশ চাই’, ‘ধর্ষণের আইন, ফাঁসি চাই’- এই ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। এর আগে শনিবারও শিক্ষার্থীরা নগরীর ওয়াসা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। তবে তারা সড়কে গাড়ি চলাচলে কোনো বাধা দেয়নি।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবরে সামনে কর্মসূচিতে মহানগর কমিটি ও বিভিন্ন কলেজের ছাত্রলীগ নেতারা এসে সংহতি জানান।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী প্রেসক্লাবের সামনে এসেছিলেন। তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেছেন। সড়কে নামেননি। প্রেসক্লাবের সামনে কয়েক ঘণ্টা অবস্থান করে নিজেরাই আবার চলে গেছেন।’

কর্মসূচিতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন সেগুলো হলো

0১.ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ
২. চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ
৩. ওমরগণি এম ই এস কলেজ
৪. চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ
৫. নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
৬. কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ
৭. সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ
৮. সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়
৯. বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয় (বাওয়া স্কুল) এবং
১০. চট্টগ্রাম আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবন্ধনে সংহতি বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইয়াকুব আলী বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনা এখন সমাজে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে গেছে। আমাদের শিক্ষার মধ্যে যদি নৈতিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে না পারি, নিজেদের মধ্যে যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, আস্থা, ভালোবাসা গড়ে তুলতে না পারি তাহলে এ সমস্যাটা সাময়িক আইন দিয়ে হয়তো নিয়ন্ত্রণ ও ধামাচাপা দেওয়া যাবে।’

এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শামসুন্নাহার হলের প্রভোস্ট লায়লা খালেদা আঁখি। তিনি বলেন, ‘ধর্ষকদের অল্প সময়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারলে ধর্ষণের ঘটনা কমে আসবে। কার্যকরী পদক্ষেপ নিলে ধর্ষণকারীরা ভয় পাবে। কিছুদিন আগেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক মেয়ে বাসে নানারকম যৌন হয়রানি শিকার হয়েছে। কিন্তু অপরাধীদের বিচার হয়েছে কিনা আমরা জানতে পারিনি। অপরাধীদের গ্রেফতার করা হলেও আইন ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরোও বলেন ‘ধর্ষণকারীদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে পারলে ধর্ষণের ঘটনা কমে যাবে। আমাদের চারপাশে শিশুদের এ বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে এই পরিস্থিতিতে প্রতিটি নারী অনিরাপত্তায় ভোগেন। আর প্রতিটি মেয়েকেও এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’

এইচটি/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!