দ্বিতীয় ম্যাচেও আফগান ‘এ’ দলের কাছে হেরে গেলেন মিথুন-সাব্বিররা

প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের কাছে বাজেভাবে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও পারেনি জাতীয় দলের আদলে গড়া বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ইমরুল, মিথুন, বিজয়, সাব্বির, আবু হায়দার, আবু জায়েদরা নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের পাইপলাইনের খেলোয়াড়। পঞ্চপাণ্ডব খ্যাত মাশরাফী, সাকিব, মুশফিক, তামিম ও মাহমুদউল্লাহরা না থাকার সময়ে তাদের হাতেইতো থাকার কথা জাতীয় দলের পতাকা। কিন্তু বাংলাদেশ দলের সেই পাইপলাইনের বেহাল দশা চলছেই! নিজেদের মাঠ, চেনা কন্ডিশন পেয়েও আফগানিস্তান ‘এ’ দলের কাছে দেখল টানা দ্বিতীয় হার। রোববার ৪ উইকেটে হেরেছে টাইগারদের ‘এ’ দল। যে দলে খেলছেন শ্রীলঙ্কা সিরিজের স্কোয়াডের চারজন।

সিনিয়র ইমরুল থেকে শুরু করে মিঠুন, বিজয়, সাব্বির, আবু হায়দার, আবু জায়েদরা, আফিফ হোসেন খেলছেন দলে। প্রত্যেকেরই আছে জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা। এরমধ্যে সাব্বির, মিঠুন, বিজয়, ফরহাদ রেজা তো আছেন শ্রীলঙ্কা সফরের দলেও। এত এত তারকায় ঠাসা দলটাই প্রায় অনভিজ্ঞ আফগান ‘এ’র কাছে হেরে গেল টানা দুম্যাচে।

মোহাম্মদ মিঠুনের নেতৃত্বে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৭৮ রানের ভালো সংগ্রহই গড়ে স্বাগতিকরা। আফগানিস্তান ‘এ’ দল ৫ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকদের। ম্যাচ সেরা হন সেঞ্চুরিয়ান আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে রোববার (২১ জুলাই) টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ওপেনিং জুটিতে ইমরুল কায়েস এবং এনামুল হক বিজয় তুলে নেন ৫৬ রান। ব্যক্তিগত ২৬ রানে বিদায় নেন শ্রীলঙ্কা সিরিজে সুযোগ পাওয়া বিজয়। ইমরুল কায়েস করেন ৪০ রান। সিনিয়র এই ওপেনারের ৫৫ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি বাউন্ডারি। তিন নম্বরে নেমে দলপতি মোহাম্মদ মিঠুন খেলেন ৮৫ রানের ইনিংস। লঙ্কান সিরিজ খেলতে উড়াল দেওয়ার আগে তার ৯৪ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর ৪টি ছক্কার মার। আগের ম্যাচে তিনি করেছিলেন ৩ রান।

দ্বিতীয় ম্যাচেও আফগান ‘এ’ দলের কাছে হেরে গেলেন মিথুন-সাব্বিররা 1
আফগানিস্তানের তরুণ ব্যাটসম্যানদের কাছে অনেকটা অসহায় ছিল জাতীয় দলের আদলে করা বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বোলাররা।

মোহাম্মদ নাঈম ৫৭ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৪৯ রান। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে সাব্বির রহমান নিজেকে কিছুটা ঝালিয়ে নিয়েছেন। ৩৮ বলে ৩৫ রান করার পথে সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে একটি করে চার ও ছক্কা। শ্রীলঙ্কা সিরিজে সুযোগ পাওয়া ফরহাদ রেজা ১ রান করেন। আফিফ হোসেন ৮, মেহেদি হাসান ১০, আবু হায়দার ৭*, শফিউল ইসলাম ০ আর আবু জায়েদ রাহি ১* রান করেন।

আফগানদের হয়ে বিশ্বকাপ খেলে আসা সৈয়দ শিরজাদ ৯ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে একটি উইকেট তুলে নেন। শরাফুদ্দিন আশরাফ ১০ ওভারে ৩৭ রানের বিনিময়ে পান একটি উইকেট। করিম জানাত ৮ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট। ১০ ওভারে ৪৮ রান খরচায় তিনটি উইকেট পান ফজল নিয়াজাই।

২৭৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামা আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ করেন ২১ রান। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান সেঞ্চুরি তুলে নেন। তার ১৪৯ বলে সাজানো ১২৭ রানের ইনিংসে ছিল সাতটি চার আর সাতটি ছক্কা। উসমান ঘানি ২৬, দলপতি নাসির জামাল ১১, দারউইস রাসুল ৭ রান করেন। করিম জানাত ২৪ রান করে বিদায় নেন। শরাফুদ্দিন আশরাফ ১৭ বলে দুটি চার, তিনটি ছক্কায় ৩৬ আর ফজল নিয়াজাই ৮ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। এই জুটি শেষ ১৮ বলে ৩৭ রান তুলে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন থাকেন।

পেসার শফিউল ইসলাম ৯.২ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে পান দুটি উইকেট। আবু জায়েদ রাহি ১০ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে পান একটি উইকেট। ফরহাদ রেজা ৪.৫ ওভারে ৪২ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। মেহেদি হাসান ১০ ওভারে ৩৪, আফিফ হোসেন ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। আবু হায়দার ১০ ওভারে ৫৬ রান খরচায় পান একটি উইকেট। সাব্বির রহমান ২ ওভারে ১০ রানের বিনিময়ে তুলে নেন একটি উইকেট।

সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটিও হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে। সিরিজে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচটি জিততেই হবে স্বাগতিকদের। ২৪ জুলাই সেখানে তৃতীয় ম্যাচ খেলে দুই দল ফিরবে ঢাকায়। সাভারে আগামী ২৭ ও ২৯ জুলাই শেষ দুই ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!