দেড় কোটি টাকার ৪০ টন কাপড়ের জালিয়াতি ধরার পর আমদানিকারক আর দায় নিচ্ছে না
এক পণ্যের ঘোষণা দিয়ে অন্য পণ্য আমদানি
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এক পণ্যের ঘোষণা দিয়ে আবার আনা হল অন্য পণ্য। এবার ব্লিচড ফেব্রিক আনার ঘোষণা দিয়ে বাস্তবে আমদানি করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৪০ টন পর্দা ও সোফার কাপড়।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি এই কাণ্ডের হোতা। জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পেরে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৪০ টন পর্দা ও সোফার কাপড় আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কতৃর্পক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করীম জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে আসা একটি কন্টেইনার প্রায় দেড় মাস এবং অপর একটি কন্টেইনার ২০ দিন পার হলেও খালাসের জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অপরদিকে কন্টেইনারে ঘোষণা বহির্ভূত পর্দা ও সোফার কাপড় আছে— গোপনে এমন খবর পেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম বিশেষায়িত সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে কন্টেইনার দুটির ‘বিএল’ ব্লক করে রাখে। পণ্য পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমদানিকারকের প্রতিনিধিকে মৌখিকভাবে অনুরোধ করে এআইআর টিম।
জানা গেছে, এর পরই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হঠাৎ সুর বদলে ফেলে। কাস্টমসকে তারা জানায়, কন্টেইনার দুটি তাদের প্রতিষ্ঠান আমদানি করেনি। কেউ তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে পণ্যের চালান দুটি আমদানি করেছে।
সহকারী কমিশনার রেজাউল করীম জানান, কাস্টমস কমিশনারের নির্দেশে কন্টেইনার দুটি ‘ফোর্স কিপ ডাউন’ কায়িক পরীক্ষার উদ্যোগ নেন এআইআর শাখার কর্মকর্তারা।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) কায়িক পরীক্ষায় ঘোষিত পণ্য শিল্পের কাঁচামালের (ব্লিচড ফেব্রিক) পরিবর্তে পাওয়া যায় প্রায় ৪০ মেট্রিক টন পর্দা ও সোফার কাপড়। এক্ষেত্রে দেড় কোটি টাকা মূল্যের এই চালানে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়।
উল্লেখ্য, দেশীয় পোশাক শিল্পের প্রসারের লক্ষ্যে ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানগুলোকে এলসি ছাড়াই আইপি-এর মাধ্যমে কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দিয়েছে সরকার।
এছাড়া শিল্পের কাঁচামালের ক্ষেত্রে দ্রুত খালাসের আওতায় পণ্যচালানগুলো ছাড় দেওয়া হয়। এই সুযোগের অপব্যবহার করে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে অভিনব পন্থায় শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এএস/সিপি