দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে টেকনাফ স্থলবন্দর

গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেশনাফ : উন্নয়নের মহা-সড়কে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, সেই উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নিতে সরকারকে সহযোগীতা করে যাচ্ছে টেকনাফ স্থলবন্দর। এই বন্দরটি প্রতিষ্টিত হওয়ার পর থেকে ব্যবসায়ীরা সরকারকে দিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব। প্রতিদিন পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার মালামাল আমদানি-রপ্তানি করে থাকে।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, বিগত ২১ বছর আগে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম শুরু হয়। এর পর থেকে স্থলবন্দর ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে সরকারকে দিয়ে আসছে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব। প্রতি মাসে এই বন্দর থেকে সরকার ৮-৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। বর্তমানে দেশের উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে টেকনাফ উপজেলার এই স্থলবন্দরটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আমদানি করা কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকার পণ্য ট্রাক ভর্তি হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
বন্দর সুত্রে আরো জানা যায়, ২১ বছরের উক্ত সময়ের ব্যবধানে বন্দর ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে ৩৬ হাজার ৬০ কোটি, ৫৫ লক্ষ, ৭০ হাজার, ৯০০ টাকার বিভিন্ন প্রকার মালামাল আমদানি করেছে। তার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রপ্তানি হয়েছে ১৮০ কোটি ৯০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৭০০ টাকা বিভিন্ন প্রকার নিত্য প্রযোজনীয় সামগ্রী। এই সমস্ত মালামাল গুলো আমদানি-রপ্তানি করে ব্যবসায়ীরা সরকারকে ১০৫০ কোটি ৮০ লক্ষ ৯০ হাজার ৭২৫ টাকা রাজস্ব দিতে সক্ষম হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন বছর ২০১৭ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারী এই দুই মাসে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা সরকারের দেওয়া রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা চাড়িয়ে বিশাল সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। তার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে সহযোগীতা করে যাচ্ছে টেকনাফ স্থলবন্দরটি। এইভাবে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা সরকারকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে সহযোগীতা করে আসছে এবং দিন বদলের পালা নিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। অথচ বিগত ২১ বছরের ব্যবধানে এই বন্দরটির তেমন কোন উন্নয়ন দেখা যায়নি। এই বন্দরে আসা মালামাল গুলো আরো দ্রুতগতিতে খালাস করার জন্য কোন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। উন্নতমানের কোন প্রযুক্তি না থাকায় বন্দর শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক শ্রমিক হয়েছে নিহত, হয়েছে আহত। আবার অনেক শ্রমিক হাত পা ভেঙ্গে পঙ্গুত্ব জীবন-যাপন করে যাচ্ছে।
এব্যাপারে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণে পর্যটন নগরী টেকনাফ সীমান্ত শহরের এই বন্দর থেকে সরকার প্রতি মাসে আয় করছে কোটি কোটি টাকা । অথচ ২১ বছরে এই বন্দরটির উন্নয়নে তেমন কোন সফলতা আসেনি। তাই আমাদের দাবি টেকনাফ স্থলবন্দরকে আরো ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন রুপে উন্নয়ন করতে হবে। তাহলে সরকার এই স্থলবন্দর থেকে আরো বেশি রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হবে।
টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, সীমান্ত নগরী টেকনাফ উপজেলার এই স্থলবন্দরটি প্রতিষ্টিত হওয়ার পর থেকে সরকারী রাজস্ব খাতে বড় ভুমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। এই বন্দরকে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে নতুন রুপে উন্নয়ন করা হলে এই বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন প্রকার মালামাল আমদানি-রপ্তানি করে এর চেয়ে আরো বেশি রাজস্ব দিতে সক্ষম হবে। তিনি আরো বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি আরো বৃদ্ধি করতে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে। দুই-দেশের সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি সঠিক ভাবে বজায় রাখতে পারলে সীমান্ত বানিজ্যের ব্যবসা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে। সরকার পাবে প্রচুর পরিমান রাজস্ব।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!