দেড় বছর পর শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এবার যন্ত্রপাতি কেনার বাজেট ৯২ কোটি

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরে গড়ে ওঠা শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মেগাওয়াটের পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট। দেড় বছর পর আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এটির জন্য নতুন যন্ত্রপাতি কিনতে বাজেট করা হয়েছে প্রায় ৯২ কোটি টাকা।

জানা গেছে, আগামী এপ্রিল মাসে উৎপাদনে আসছে সরকারি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এবার উৎপাদন বাড়িয়ে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়লাভিত্তিক রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট পুনরায় উৎপাদনে ফিরে এসেছে। সরকারি এই উদ্যোগের ফলে দেশে বিদ্যুৎ সংকট অনেকাংশে সমাধান হবে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ঢাকার জেঅ্যান্ডসি ইমপেক্সের কাছ থেকে শিকলবাহা পাওয়ার প্ল্যান্টের গ্যাস টারবাইন অংশের সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ সংগ্রহ, স্থাপন এবং বিশেষজ্ঞ সেবা নেবে।

এদিকে বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য ৯১ কোটি ৮৫ লাখ ৫১ হাজার ৪৮৯ টাকার যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে গ্যাসনির্ভর তিন বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি সচল রাখতে প্রয়োজন ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর মধ্যে শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখতে প্রয়োজন ৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ও শিকলবাহার ৬০ মেগাওয়াটের অপর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রয়োজন ১৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

গত দেড় বছরের বেশি সময় আগে শিকলবাহার দুই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল)। এমনকি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ডলার সংকট ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের (পিডিবি) সাতটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সাত কেন্দ্রের তিনটি গ্যাসভিত্তিক, দুটি পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট, একটি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও একটি কম্বাইন্ড সাইকেল। যার উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২৮৫ মেগাওয়াট। দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো চলছিল জোড়াতালি দিয়ে। এর মধ্যে চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিকলবাহার বিদ্যুৎ কেন্দ্রও ছিল।

এছাড়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে গ্যাসভিত্তিক তিন বিদ্যুৎ কেন্দ্র। শিকলবাহায় রয়েছে ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়া ১৫০ ও ৬০ মেগাওয়াট দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রও রয়েছে।

কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নে রয়েছে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইউনিট-২ এবং ৩ নম্বর ইউনিটে রয়েছে ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

শিকলবাহার এলাকার বাসিন্দারা জানান, আমরা শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিচেই বসবাস করি, কিন্তু পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ পাই না। এটা শিকলবাহাবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কামরুদ্দিন আহমেদ জানান, গ্যাস টারবাইনসহ অন্যান্য যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ আছে শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এবার নতুন করে যেসব সংস্কারকাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে আগামী এপ্রিলে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!