ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এক টুইটে এই উদ্বেগ জানানো হয়। তাতে প্রথম আলো সম্পাদকসহ নয়জনের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
অ্যামনেস্টির টুইটে বলা হয়, এই মামলা যেন মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় আরও কড়াকড়ি আরোপের হাতিয়ার হয়ে না ওঠে, কর্তৃপক্ষকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
#Bangladesh: The editor of Prothom Alo and 8 others accused in a case of alleged criminal negligence must have their right to a fair trial guaranteed. The authorities must also ensure that the case is not used as a pretext to further restrict the right to freedom of expression.
— Amnesty International South Asia, Regional Office (@amnestysasia) December 3, 2020
গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাকার রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রথম আলোর সহযোগী প্রকাশনা ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন মাঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় নাইমুল আবরার নামে এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় করা মামলায় গত ১২ নভেম্বর প্রথম আলো সম্পাদকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন এবং কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হককে অব্যাহতি দেন আদালত।
নাইমুলের মর্মান্তিক ও দুঃখজনক মৃত্যুর দুর্ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করায় এর আগে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছিল সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ।
রোববার (২৯ নভেম্বর) সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, কিশোর আলোর ওই বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে না থাকার পরও মতিউর রহমানকে আসামি করা হয়। এ বিষয়ে আইনের শাসনের প্রতি সম্মান রেখে সম্পাদক পরিষদ মনে করে, দুর্ঘটনাস্থলে না থাকার পরও আসামি করে অভিযোগ গঠন উদ্বেগজনক।
এর আগে গত ১৭ নভেম্বর দেশের ১৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, মামলাটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। এ ধরনের চেষ্টা থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তারা। বিশিষ্টজনেরা বলেছিলেন, ‘দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর একের পর এক যেসব আঘাত আসছে এবং অতীতে মতিউর রহমানসহ দেশের মুক্তচিন্তার বরেণ্য সম্পাদকদের বিরুদ্ধে যেসব হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, সেগুলো থেকে এই মামলাকে আলাদা করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। আমরা এই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদকসহ সব অভিযুক্তের পরিপূর্ণ আইনগত প্রতিকার পাওয়ার অধিকার অবারিত রাখার দাবি জানাচ্ছি।’