দুপুরের পর পানিতে ভাসে খাতুনগঞ্জ আছদগঞ্জ চাক্তাই

ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ এখন পানিতে থৈ থৈ। জোয়ারের পানিতে প্রতিদিনই কমবেশি ডুবছে খাতুনগঞ্জ। এতে ব্যবসায় নেমে আসছে মারাত্মক ধস।

জানা গেছে, বুধবার থেকে রোববার প্রতিদিন দুপুরেই উঠে যায় পানি। বৃষ্টি হোক আর না হোক— জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন ভাসছে খাতুনগঞ্জ। ব্যবসায়ীদের অনেকের মতে, এতে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে অন্তত কোটি কোটি টাকা। এর সঙ্গে বৃষ্টি যুক্ত হলে সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে নানা প্রকল্প এবং নাগরিক সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাস কেটে যাচ্ছে বছরের পর বছর। কিন্তু পানিতে তলিয়ে যাওয়ার হাত থেকে যেন রেহাই নেই। লঘুচাপ সৃষ্টি হলে সাগরের পানি ফুলে ফেঁপে ওঠে— যা ডুবিয়ে দেয় বাণিজ্যিক এলাকা ও লোকালয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিত্যদিনের এই জলাবদ্ধতায় নাকাল শুধু খাতুনগঞ্জই নয়— আছদগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের মতো ব্যস্ত বাণিজ্য কেন্দ্রেরও একই দশা। বৃষ্টি ও জোয়ারের সময় বিক্রি বন্ধ রেখে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন পচনশীল ভোগ্যপণ্য রক্ষার কাজে। ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের এ কষ্টই যেন এখন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুপুরে যখন ব্যাংকে লেনদেনের চাপ, ঠিক তখনই খাতুনগঞ্জে ঢুকে পড়ছে পানি। স্টক করা মালামাল দুই থেকে তিন ভাঁজ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। এভাবে ক্ষতির শিকার অনেক ব্যবসায়ী ও আড়তদার।

দুপুরের পর পানিতে ভাসে খাতুনগঞ্জ আছদগঞ্জ চাক্তাই 1

খাতুনগঞ্জ ট্রেড এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার অর্থ বরাদ্দে কোনো কার্পণ্য করেনি। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রচুর অর্থ দেওয়া হয়েছে। কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িতও হয়েছে। কিন্তু আমরা তার সুফল পাচ্ছি না।’

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ, চাক্তাই মিলে প্রায় ১০ হাজার ব্যবসায়ী রয়েছে। জলাবদ্ধতায় সব ব্যবসায়ীর ক্ষতি হচ্ছে। দৈনিক ৫০০ কোটি টাকার ব্যবসা হাতছাড়া হচ্ছে এখান থেকেই।’

খাতুনগঞ্জের তৈয়বিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী সোলাইমান বাদশা বলেন, ‘এতোদিন ক্ষতি করেছিল মহামারি করোনা। যা এখন একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ঠিক তখনই জলাবদ্ধতায় আরেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা।’

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগরীকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষায় গৃহীত হয়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প, যা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বলা হচ্ছে, এর সুফল দেখতে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ পর্যন্ত ওই প্রকল্পের ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!