দুই ভাইকে গুলি করে হত্যা, ওসি প্রদীপসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

এবার চন্দনাইশের দুই ভাইকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও গুলি করে হত্যার অভিযোগ এনে টেকনাফ থানার বিতর্কিত ওসি প্রদীপসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নিহত দুই ভাই ফারুক ও আজাদের স্বজনরা।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) তাদের ছোট বোন রিনাত সুলতানা শাহীন বাদি হয়ে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমীর আদালতে ওসি প্রদীপসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এএসপিকে (আনোয়ারা) মামলাটি তদন্ত করে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রদীপ কুমার দাশ ছাড়াও এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক ইফতেখারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাজহারুল, দ্বীন ইসলাম ও আমজাদ। এছাড়া স্থানীয় চন্দনাইশ থানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও এই ঘটনায় জড়িত দাবি করে তাদের নাম তদন্তে জানা যাবে বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করেন বাদি।

মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট জিয়া আহসান হাবীব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দুই সহোদরকে তুলে নিয়ে গিয়ে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করেন টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেশব চক্রবর্তীর যোগসাজশে ওই দুই ভাইকে তুলে নিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত’ দুই ভাইয়ের স্বজনরা।

এর আগে গত ১৩ জুলাই প্রথমে বাহারাইন ফেরত ছোট ভাই আজাদ নিখোঁজ হয়। এর দুইদিন পর ১৫ জুলাই আজাদের বড় ভাই ফারুককে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের সামনের ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় চন্দনাইশ থানা পুলিশ। ওদিন সন্ধ্যায় ফারুককে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়। কয়েক ঘন্টার মাথায় ফারুক ও আজাদের মায়ের মোবাইলে একটি নম্বর থেকে ফোন করে অজ্ঞাত পরিচয় একজন বলেন, ‘তোর দুই ছেলে আমাদের কাছে আছে। দুই ছেলেকে জীবিত ফেরত চাইলে রাতের মধ্যে আমাদের ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। না হলে সকালে ছেলের লাশ পাবি।’ একথা বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। যেমন কথা তেমন কাজ। এর পরদিন ১৬ জুলাই সকাল ৮টা নাগাদ টেকনাফ থানা থেকে তাদের মায়ের নম্বরে ফোন করে জানানো হয় দুই ভাই আজাদ ও ফারুক টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।

এই ঘটনায় গত ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম প্রতিদিনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আজকে মামলার ফাইলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সেই প্রতিবেদনও আদালতের নজরে আনা হয়েছে বলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানিয়েছেন বাদির আইনজীবী এডভোকেট জিয়া আহসান হাবীব।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!