দুই দিনে চট্টগ্রামে এনসিসি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার মৃত্যু করোনার উপসর্গ নিয়ে

সপ্তাহ আগে মারা গেছেন এক নিরাপত্তাকর্মীও

চট্টগ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে পর পর দুদিনে মারা গেলেন বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের দুই উর্ধতন কর্মকর্তা। এর মাত্র সপ্তাহখানেক আগে মারা গেছেন ওই ব্যাংকের এক নিরাপত্তা কর্মীও।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (১২ মে) বিকেলে মারা যাওয়া শহীদ উল্যাহ মজুমদার (৫০) ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্শিয়াল (এনসিসি) ব্যাংকের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে সোমবার (১১ মে) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান এনসিসি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) জামসেদ হায়দার চৌধুরী। দুজনেই পরস্পর আত্মীয়। শহীদ উল্যাহ মজুমদার এনসিসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ওয়াজিউল্লাহ ভুঁইয়ার শ্যালক। আর জামসেদ হায়দার চৌধুরী ওয়াজিউল্লাহ ভুঁইয়ার মেয়ের স্বামী।

এনসিসি ব্যাংক কর্মকর্তা শহীদ উল্যাহ মজুমদারের পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহ ধরে কাশিতে ভুগছিলেন তিনি। এছাড়া তার লো প্রেশার ও শ্বাসকষ্টের সমস্যাও ছিল। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাসাতেই চিকিৎসা চলছিল তার। মঙ্গলবার (১২ মে) সকালে অবস্থার কিছুটা অবনতি ঘটলে বিকেল ৪ টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া চলছিল।

শহীদ উল্যাহ মজুমদারের মেয়ে রোজা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে থেকে উনার কাশি শুরু হয়। আমরা ডাক্তারের সাথে ফোনে আলাপ করে ওষুধ নিই। নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছিলেন। ইনহেলারও ব্যবহার করছিলেন। সব ঠিকঠাকই ছিল। হঠাৎ আজ বিকেলে উনার অবস্থার অবনতি হলে আমরা হাসপাতাল নিয়ে আসি।’

তবে ২৬ মার্চ থেকেই তিনি অফিসে যেতেন না তিনি। এমনকি বাইরেই যাওয়া হতো না জানিয়ে রোজা বলেন, ‘উনার অফিস ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ। তিনি তার দুদিন আগে থেকে অফিসে যান না। বাসা থেকে বেরই হতেন না আব্বু।’

একদিনের ব্যবধানে এনসিসি ব্যাংকের একই শাখার দুই কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনা এটি। দুজনেরই করোনার উপসর্গ ছিল। এর আগে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এনসিসি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) জামসেদ হায়দার চৌধুরীর মৃত্যু হয়। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখান থেকে ‘ফিরিয়ে দিলে’ অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন ওই কর্মকর্তা। এর আগে গত ৩ মে এনসিসি ব্যাংকের একই শাখায় কর্মরত আলাউদ্দিন নামে এক সিকিউরিটি গার্ডের মৃত্যু হয়।

এই তিনটি মৃত্যুর ঘটনায় কোন যোগসূত্র আছে কিনা কিংবা এনসিসি ব্যাংকের ওই শাখার কার্যক্রমে কোন পরিবর্তন আসছে কিনা— এই প্রশ্নের জবাবে এনসিসি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার উপ ব্যবস্থাপক কামরুল মোর্শেদ তমাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শহীদ উল্যাহ সাহেব কাজ করছেন আঞ্চলিক কার্যালয়ে, সেটি ২৬ মার্চ থেকেই বন্ধ। উনার আগে থেকেও নানা শারীরিক জটিলতা ছিল। আর জামসেদ সাহেবও সর্বশেষ অফিস করেছেন ২৮ এপ্রিল। গার্ড যে মারা গেছে সেও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কাজেই আমাদের মধ্যে খুব উদ্বেগ নেই। আমরা সব রকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আমাদের কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!