দিনে দিনেই রিপোর্ট মিলবে রাঙামাটির করোনা ল্যাবে

করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য এই প্রথম আরটি-পিসিআর ল্যাব হচ্ছে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে। আগামী ২৫ জুলাই এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে। দিনে এই ল্যাবে ২০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হবে। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, সেখানে দিনে দিনেই মিলবে করোনা নমুনার রিপোর্ট। এছাড়া রাঙামাটিতে ‘কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ’ স্থাপনের কাজও শুরু হতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই।

পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জন্য আশাজাগানিয়া দুটো উদ্যোগই বাস্তবায়ন হচ্ছে বেসরকারি সহায়তায়। এরই মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া ৬৯ লাখ টাকায় দ্রুতগতিতে চলছে পিসিআর ল্যাবের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ। এই ল্যাবে দিনে ২০০ নমুনা পরীক্ষা করে দিনে দিনেই দেওয়া হবে রিপোর্ট। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

করোনা আক্রান্তের দিক থেকে দেশের সর্বশেষ জেলা রাঙামাটি। ৬ মে শিশু ও নার্সসহ ৪ জন আক্রান্ত দিয়ে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। আর ৯ জুলাই পর্যন্ত গত ৬৪ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ঠেকেছে ৪১৮ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন সাতজন। আশার কথা, এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২৩১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যাই বেশি।

পিসিআর ল্যাবের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য গত ২৬ জুন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ৬৯ লাখ টাকা অনুদানের চেক পায় জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। রাঙামাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী এই চেক হস্তান্তর করেন।

এরপরই ল্যাব স্থাপনের অনুমতি চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। গত ১ জুলাই রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ল্যাব স্থাপনের জন্য অনুমতি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও টেকনিক্যাল কমিটি ল্যাবরেটরি ইনভেস্টিগেশন কোভিড-১৯ এর সভাপতি ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, ‘দুটো উদ্যোগই বাস্তবায়ন হচ্ছে বেসরকারি সহায়তায়। এতে রাঙামাটিবাসীর ভোগান্তি ও দুশ্চিন্তা কমবে। বসুন্ধরা গ্রুপের ৬৯ লাখ টাকায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। আশা করছি ২৫ জুলাই এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে পারবো। যোগাযোগ চলছে, খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ স্থাপনের কাজও শুরু হবে।’

রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের করোনাবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পাওয়া রিপোর্টে নতুন ২২ জন শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাঙামাটি সদরে ১৭, কাপ্তাইয়ে তিন ও কাউখালী দুই জন। ৯ জুলাই পর্যন্ত দুই হাজার ৩৬৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া গেছে দুই হাজার ২৫৩ জনের। অপেক্ষমান রয়েছে ১১৪ জনের রিপোর্ট।’

জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে রাঙামাটি সদরে আক্রান্ত ২৪৯ জনের মধ্যে সুস্থ ১৪৯ জন, কাপ্তাইয়ে আক্রান্ত ৮৪ জনের মধ্যে সুস্থ ৪৯, কাউখালীতে ২৫ জনের মধ্যে সুস্থ ১০ জন। এছাড়া জুরাছড়িতে ১৫ জনের মধ্যে সুস্থ ৬, বাঘাইছড়িতে ১৫ জনের মধ্যে সুস্থ ৪, বিলাইছড়ির ১১ জনের মধ্যে সুস্থ ২, লংগদুতে ৯ জনের মধ্যে সুস্থ ৫, রাজস্থলীতে ৬ জনের মধ্যে সুস্থ ৪, নানিয়াচরে ২ জনের মধ্যে ২ জনই সুস্থ এবং বরকলে ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

এএইচ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!